লাদাখে উত্তেজনা! ভারত ও চিনা সেনার মুখোমুখি সংঘাতে নিহত ১ সেনা আধিকারিক সহ ২ জাওয়ান

আমাদের ভারত, ১৬ জুন: আলোচনার মাধ্যমেই বেজিং আর নয়াদিল্লি সীমান্ত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছে। বেশ কিছুদিন ধরে বেশকিছু লম্বা-চওড়া কূটনৈতিক বিবৃতিও দিয়েছেন উভয় পক্ষ। কিন্তু তাতে শেষ পর্যন্ত লাভ হল না। সোমবার রাতে লাদাখের গালওয়ান উপতাকায় দুপক্ষের সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘাতে ভারতীয়সেনার এক আধিকারিক ও দুই জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে।

সেনা তরফ একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে গালওয়ান উপত্যকায় উত্তেজনা কমাতে দুই পক্ষই আলোচনায় বসছিল। কিন্তু তার মধ্যে সোমবার মুখোমুখি সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়। আর তাতেই এক সেনা আধিকারিক ও দুই জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। বিবৃতিতে আরোও জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে লাদাখের সীমান্তে দু’দেশের সেনাবাহিনীর কমান্ডার স্তরে বৈঠক চলছে। দুই দেশ উত্তেজনা কমানোর জন্য আলোচনায় বসা হয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ১৯৭৫ সালের পর পিপলস লিবারেশন আর্মি সঙ্গে সংঘাতে এই প্রথম প্রাণ গেল ভারতীয় জওয়ানের। সূত্রের খবর সীমান্তে কোন গোলাগুলি হয়নি। শুধুমাত্র হাতাহাতিতে মৃত্যু হয়েছে সেনা আধিকারিক ও দুই জওয়ানের।

ভারতের তরফে বলা হয়েছে দু’পক্ষের জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কতজন চিনা সেনা মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায়নি। গোটা ঘটনার জন্য দিল্লির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বেজিং। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার খবর,চিন দাবি করেছে ভারতীয় জাওয়ানরাই নাকি প্রথম প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে চিনের সেনার উপর হামলা চালিয়েছে। তারপরই সংঘাত শুরু হয়।

মে মাসে লাদাখের প্যাংগং লেকের কাছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় উভয় তরফের সেনার মধ্যে তীব্র সংঘাতের ঘটনা ঘটেছিল। রুটিন টহলদারির সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী ও ইন্দো টিবেটিয়ান বর্ডার ফোর্সের জাওয়ানদের আটকে রেখেছিল চিনা সেনা। কেড়ে নেওয়া হয়েছিল তাদের অস্ত্র। পরে যদৈ তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আর তারপর থেকেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। লাদাখে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে যেতে শুরু করে ভারত। এদিকে তার মধ্যে একটি উপগ্রহ চিত্র সামনে আসে, যেখানে দেখা যায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার খুব কাছে বিমানঘাঁটি তৈরি করে ফেলেছে চিন। এমনকি তাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে তাদের যুদ্ধবিমানও। অন্যদিকে চিনা রাষ্ট্রপতি সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে বলে ফেলেন, খারাপ পরিস্থিতির জন্য সবসময় যেন তারা প্রস্তুত থাকে।

কিন্তু এরপর কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়। তাতে খানিকটা বরফ গলেওছিল বলে খবর। লাদাখ থেকে ধাপে ধাপে সেনা সরিয়ে আনতে শুরু করেছিল ভারত। কিন্তু তার মধ্যেই সোমবার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় প্রাণঘাতী সংঘর্ষ হয়ে গেল যা ফলে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়ে দিল বলেই ধারণা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *