আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১৯ ফেব্রুয়ারি: জস্মিনা খাতুন। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হিসেবে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সে। পরীক্ষাকেন্দ্র লোহাপুর মহাবীর রাম মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়। বাইরে অপেক্ষায় মা রোজিনা বেওয়া। বাড়ি নলহাটি ২ ব্লকের ভবানীপুর পঞ্চায়েত জ্যেষ্ঠা গ্রামে। মেয়েকে নিয়ে তাঁর অনেক চিন্তা। মেয়ে যে মূক ও বধির। খুব কষ্ট করে বিড়ি বেঁধে মেয়েকে পড়াচ্ছেন তিনি। মেয়ে জস্মিনাও বাড়ির কাজকর্ম করে পড়াশোনা করতো। মনে জেদ ছিল আপার। গ্রামের এক গৃহশিক্ষক বিনা বেতনে সব বিষয় দেখিয়ে দিতেন তাকে। নিজে পড়াশোনা না জানলেও, মেয়েকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে দিতে চান।
রোজিনা বেওয়া বলেন, মেয়ে পড়াশোনায় খারাপ না। তবে বোবা ও কানে শুনতে পায় না। তাই অসুবিধা তো হতোই। সব বাচ্চারা জোরে জোরে পড়তো। ও তা পারে না। তাই অভাবের সাথে আক্ষেপ একটা ছিল। তিনি জানান, রাজ্য সরকার না থাকলে হয়তো জীবনটাই ভেসে যেত। স্বামী আব্দুল হকের ইন্তেকালের পর দুই মেয়ে নিয়ে অকূল সমুদ্রে পড়েন তিনি। বড় মেয়ে রুবিনার বিয়ে দেওয়ার পর সমস্যায় পড়েন ছোট মেয়ে জস্মিনা খাতুনকে নিয়ে। কারণ তার শারীরিক সমস্যা। নুন আনতে পান্তা ফুরায় পরিবারের অবলম্বন বলতে ছিল বিড়ি বাঁধা। বিড়ি বেঁধে মেয়েকে পড়াচ্ছেন। তবে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন তিনি। বাড়ি পেয়েছেন। বিপিএল তালিকাভূক্ত হওয়ায় রেশনে চাল, গম, তেল পান। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হিসেবে মাসে হাজারটাকা ভাতা পায় জস্মিনা।
শুকরাবাদের বাসিন্দা প্রধান দিলীপ দাস জানান, বিপিএল তালিকাভূক্ত হওয়ায় সরকারি সুবিধা পায় ওই পরিবার। জস্মিনার মামা মতিবুর সেখ জানান, খুব কষ্ট করে মেয়েকে পড়াচ্ছেন দিদি। সরকারও আমাদের মত দুঃস্থ পরিবারের পাশে আছে। আঠারো বছর বয়স হলেই কন্যাশ্রী পাবে।