আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ ডিসেম্বর:
মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের গোলাড় সুশীল হাইস্কুলের উদ্যোগে এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর দ্বিশততম জন্মবর্ষ উদযাপন কমিটি ও মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সহযোগিতায় পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম দ্বি-শতবর্ষ স্মরণে গোলাড় সুশীলা হাইস্কুল থেকে বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান ঘাটালের বীরসিংহ গ্রাম পর্যন্ত প্রায় তিরিশ কিলোমিটার সাইকেল যাত্রা অনুষ্ঠিত হল। এই সাইকেল যাত্রায় বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও এলাকাবাসী অংশ নেন।
সাইকেল যাত্রা শুরুর আগে বিদ্যালয়ে অবস্থিত ঈশ্বরচন্দ্রের মর্মর মূর্তিতে মাল্যদান করেন উপস্থিত অতিথিবৃন্দ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরুর আগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেশ পড়িয়া। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সরোজ দাস। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, মশাল প্রজ্বলন ও ফিতা কাটার মধ্য দিয়ে সাইকেল যাত্রা শুরুর সবুজ সংকেত দেন উপস্থিত অতিথিবৃন্দ। উড়ানো হয় শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা।পাশাপাশি অতিথিরাও কিছুটা পথ সাইকেল যাত্রায় সামিল হন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যাসাগর জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট বাগ্মী নন্দদুলাল ভট্টাচার্য।
এদিনের সকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেশপুরেরর বিডিও দীপক ঘোষ। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেশপুর থানার ওসি বিশ্বরঞ্জন ব্যানার্জি, গোলাড় ৪নং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হাবিবা বেগম, বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রেণুপদ মান্না, বিদ্যাসাগর জন্ম দ্বি-শতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নন্দদুলাল ভট্টাচার্য, কেশপুরের সম্পাদক বিষ্ণুপদ দে, শিক্ষানুরাগী সাইফুল মির্জা, ঝেঁতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ প্রসাদ চৌধুরী, মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্রের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন স্নেহাশীষ চৌধুরী, অরিন্দম দাস, সুদীপ কুমার খাঁড়া, নরসিংহ দাস সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা।
সাইকেল যাত্রা গোলাড় সুশীলা হাইস্কুল থেকে শুরু হয়ে মনোহরপুর অঞ্চল কাঠের সেতু, ডিঙ্গাল স্বাস্থ্য কেন্দ্র, রাধানগর হয়ে বীরসিংহে পৌঁছায়। সেখানে বিদ্যাসাগর ও ভগবতী দেবীর প্রতিকৃতিতে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাল্যদান করা হয়। বিদ্যাসাগরের স্মৃতি বিজড়িত স্থান গুলো ঘুরে দেখে পড়ুয়ারা। দ্বিপ্রাহরিকের আহারের পর সাইকেল যাত্রীরা পুনরায় একই পথে ফিরে আসে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেশ পড়িয়া জানান, তাঁরা বিদ্যাসাগরের জন্মভিটা মাটি সংগ্রহ করেছেন এবং পরবর্তী কালে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি বরণে সেই মাটি ‘চন্দন তিলক’ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। পাশাপাশি তিনি এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানান। উল্লেখ্য গত সেপ্টেম্বর মাসে বিদ্যাসাগরের জন্মদিনেই এই কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তখন এই কর্মসূচি করা
যায়নি।