চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পুরুলিয়ার সাংস্কৃতিক মহল

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ১০ জুন: চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেবদাশগুপ্তের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পুরুলিয়ার সাংস্কৃতিক মহল। আজ সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর আসতেই পুরুলিয়ার সংস্কৃতি প্রেমী ও তাঁর সান্নিধ্যে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

তাঁর বেশির ভাগ ফিল্মের শুটিং স্পট হিসাবে বেছে নিতেন পুরুলিয়াকেই। ভূমি পুত্র হিসাবে এই ব্যক্তিত্বের নানা স্মৃতি রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে সমৃদ্ধ এই জেলায়। ১৯৪৪ সালে পুরুলিয়ার আনাড়ায় জন্ম চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাগুপ্তের জন্ম। তাঁর বাবা তারাকান্ত দাশগুপ্ত ভারতীয় রেলওয়ের ডাক্তার ছিলেন। সেই কারণে আনারা স্টেশনের কাছে রেল কোয়ার্টারে থাকতেন তিনি। বারো বছর বয়সে তিনি হাওড়ার দিনবন্ধু স্কুলে পড়াশোনা করার জন্য কলকাতায় যান। পরে, স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন।

বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি কিডনির রোগে ভুগছিলেন। ডায়ালিসিস চলছিল, তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাসভবনেই মৃত্যু হল তাঁর। বয়সজনিত কারণে সমস্যা ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা নাগাদ প্রয়াত হন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে, এক সোনালী অধ্যায়ের অবসান হল। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকালও তাঁর ডায়ালিসিস হয়েছিল। আজ ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় এই বিশিষ্ট পরিচালকের।

তাঁর বিখ্যাত কয়েকটি ছবি হল বাঘ বাহাদুর, তাহাদের কথা, চরাচার ও উত্তরা। সিনেমা-প্রেমীদের অনেকের মতে, তাঁর শ্রেষ্ঠ পাঁচটি চলচ্চিত্র হল, বাঘ বাহাদুর (১৯৮৯); চরাচার (১৯৯৩), লাল দরজা (১৯৯৭), মন্দ মেয়ের উপাখ্যান (২০০২), কালপুরুষ (২০০৮)।

দৌরাতওয়া (১৯৭৮) ফিল্ম এর জন্য; তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। তাহাদের কথা (১৯৯৩) ফিল্মের জন্য বাংলাতে, শ্রেষ্ঠ ফিচার ফিল্মের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন। পরিচালক হিসেবে তিনি উত্তরা (২০০০) এবং স্বপনের দিন (২০০৫) এর জন্য দুবার সেরা নির্দেশনার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন।

বুদ্ধদেবের ফিচার ফিল্ম, সময়ের কাছে (১৯৬৮), দুরত্ব (১৯৭৮), নিম অন্নপূর্ণা (১৯৭৯),গৃহযুদ্ধ (১৯৮২),অন্ধ গলি (১৯৮৪), ফেরা (১৯৮৮), বাঘ বাহাদুর (১৯৮৯), তাহাদের কথা (১৯৯২), চরাচর (১৯৯৩), লাল দরজা (১৯৯৭), উত্তরা (২০০০), মন্দ মেয়ের উপাখ্যান (২০০২), স্বপ্নের দিন (২০০৪), আমি, ইয়াসিন আর আমার মধুবালা (২০০৭), কালপুরুষ (২০০৮), জানালা (২০০৯), মুক্তি (২০১২), পত্রলেখা (২০১২), আনোয়ার কা আজিব কিসসা (২০১৩), টোপ (২০১৭)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *