২৪ দফা দাবিতে খড়্গপুর পৌরসভার গেটে অবস্থান বিক্ষোভ ও সমাবেশ সিপিএমের

আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ আগস্ট:
বৃষ্টি উপেক্ষা করেই খড়্গপুর পৌরসভার গেটে তিনঘন্টা ধরে চলল সিপিআইএমের অবস্থান বিক্ষোভ ও সমাবেশ। খড়্গপুর শহরের চার প্রান্ত থেকে শত শত মানুষ বৃষ্টি মাথায় নিয়েই পৌরসভার বেহাল পরিষেবা ও বঞ্চনার প্রতিকার চেয়ে মিছিল সহকারে বিক্ষোভ সমাবেশে সামিল হন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব। তিনি পৌরসভার পৌরপিতা প্রদীপ সরকারের নাম ধরেই বলেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে না আনতে পারলে আপনারা কখনো স্বচ্ছ ভাবে পৌর পরিষেবা পৌঁছে দিতে পারবেন না। এখন এমনিতেই রাজ্যজুড়ে আম জনতা তৃণমূল চোর তৃণমূল চোর শ্লোগান তুলে পরিত্রান চাইছে। তিনি বলেন, মাননীয়া জিজ্ঞেস করেছিলেন মদন চোর? মুকুল চোর? পার্থ চোর? আমি চোর? আর আজ ইতিহাসের কি পরিণতি।
তিনি বলেন, বামফ্রন্ট সরকারই ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ সহ এলাকার উন্নয়ন সুচারু করতে এমন পৌরসভা ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় মানুষকে অংশগ্রহণ করিয়েছিল। আপনারা ভোট লুঠ করে দখল করবেন আর ঠিকাদার রাজ চালাবেন। সতর্ক হোন।

বিক্ষোভ সমাবেশ মঞ্চ থেকে পার্টির জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ তীব্র ভাষায় তৃণমূল দল ও সরকারের সমালোচনা করে এই দুর্নীতি পরায়ন লুঠেরা সরকারকে উৎখাত করার যে লড়াই গ্রাম বাংলা জুড়ে শুরু হয়েছে, সেই লড়াই আরোও তীব্র করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তৃণমূল ক্ষমতায় থাকবে আর এলাকায় উন্নয়ন হবে সাধারণ মানুষের এটা অলীক স্বপ্ন, আজ তা প্রমাণিত হয়েছে। একটা দল গঠিত হয়েছে চোর ডাকাত লুঠেরা বাহিনী জড়ো করে। ধরা পড়েছে চুনোপুঁটি। চোরেদের রানী, ডাকাতদের সর্দারকে জেলে ভরা সহ তার ও পরিবারের মজুত করা বেআইনি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার লড়াই চলবে শেষ পর্যন্ত।

পার্টির নেতা সবুজ ঘোড়াই বলেন, পৌরসভা চলছে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ও ঠিকাদারি পন্থায়। সাড়ে তিন বছর অবৈধ ভাবে পৌরসভায় প্রসাশক বসিয়ে যে ঠিকাদারী রাজ চলছে আজ নির্বাচন হওয়ার ছয় মাস পরও সেই নির্বাচিত পৌরসভায় চলছে পৌরপিতার ঠিকাদারি রাজ। জল কর বসিয়েও পরিস্রুত জলের পরিবর্তে কালো লালচে নোংরা জল সরবরাহ করছে। পৌর এলাকার ৩৫টি ওয়ার্ডের সিংহ ভাগ এলাকায় কোনো পানীয় জলের ব্যবস্থাই এই মুহূর্তে নেই। সব স্থানে অকেজো। গরিব মানুষকে আবাসন প্রকল্প থেকে বছরের পর বছর বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। দাবি জানানো হয় অবিলম্বে সমস্ত বস্তি এলাকায় জমির পাট্টা সহ সমস্ত কাঁচা বাড়িকে পাকা বাড়ি তৈরী করতে হবে। শহরের মুটিয়া মজদুর, অসংঘটিত শ্রমিকদের কাজ নেই, রুটি রুজির সঙ্কট। পৌর এলাকার এমন পরিবারের জব কার্ড সহ একশ দিনের কাজ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
খড়্গপুর শহরের নিমপুরা সহ ৬নং জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ১২টি ওয়ার্ড আজ দূষণের শিকার। বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ আক্রান্ত হচ্ছেন জটিল ও শ্বাসকষ্ট জনিত অসুখে। রট আইরণ সহ নানান অবৈধ কারখানার কারণে। পৌরপ্রসান এবিষয়ে নীরব থাকার পিছনে দুর্নীতির সাথে যুক্ত বলে তিনি অভিযোগ তোলেন।

সভায় বক্তব্য রাখেন এরিয়া কমিটির দুই সম্পাদক অমিতাভ দাস, মধু রায় সহ দলীয় নেতা অনিত মন্ডল। ডেপুটেশন দেওয়ার সময় পৌরপিতা বলেন, দাবি গুলি ন্যায্য। টাকা নেই কাজ করার। লোক বল না থাকায় আবর্জনা তোলার তিন চাকার গাড়ি পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। আর এলাকায় এলাকায় আর্জনার পাহাড় জমে এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে। জনগণের এমন জ্বলন্ত সমস্যার ২৪ দফা দাবি সনদ দিয়ে সমাধানের জন্য এক মাস সময় অপেক্ষা করা হবে। সমাধান না হলে পৌরসভা অচল করে ঘেরাও অবস্থান চলবে বলে দৃঢ় প্রত্যয়ে জানিয়ে দেন সমাবেশে সামিল হাজারো সিপিআইএম কর্মী সহ নেতারা। অনুষ্ঠানে
সভাপতিত্ব করেন নেতা বিজয় পাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *