আমাদের ভারত, ২৪ জুন: করোনা নিয়ে আজ ফের সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এটি ছিল রাজ্য সরকারের ডাকা দ্বিতীয় সর্বদলীয় বৈঠক। আজকের বৈঠকে বামফ্রন্টের তরফে করোনার মত অতিমারি মোকাবিলায় জেলা ব্লক বা পৌরসভাতেও সর্বদলীয় বৈঠক করার দাবি জানানো হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা, ব্লক ও পৌরসভা গুলিতেও সর্বদলীয় সভা করা উচিত কারণ এটাই গণতন্ত্র সম্মত মনোভাবের পরিচায়ক বলে জানিয়েছে বামেরা।
আজকের বৈঠকে বামেদের তরফে বেশকিছুপ্রস্তাব দেওয়া হয় বর্তমান পরিস্থিতি সাপেক্ষে। করোনার কারণে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়েছে। তার নিয়ে একাধিক অভিযোগ এসেছে। তিন মাস আগে হওয়া সর্বদলীয় সভায় ফিবার ক্লিনিক, সাধারণ চিকিৎসার সাথে করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থাপনার পৃথকীকরণ পরিসংখ্যান এবং সঠিক তথ্যের আদান-প্রদান বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রের খরচ ইত্যাদি নিয়ে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তা কার্যকরী হয়নি। ফলে মানুষ এখন বিপদে পড়ছেন বলে তাদের অভিযোগ বামেদের। তাদের অভিযোগ রাজ্যের করোনা আক্রান্ত মানুষ যেমন ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছে না, তেমনি গর্ভবতী মা সদ্যোজাত শিশু, ডায়ালিসিস, ক্যান্সারের মতো নানা রোগীরাও চিকিৎসা থেকে একাধিক জায়গায় বঞ্চিত হচ্ছেন।
উত্তরবঙ্গের জেলা গুলির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে সেখানে একাধিক অভিযোগ করেছেন মানুষ বলে তারা জানান। সেখানে করেনন্টাইন কেন্দ্রেও চূড়ান্ত অব্যবস্থার অভিযোগ করেছেন তারা।
উত্তরবঙ্গের মানুষ সহ গোটা রাজ্যের মানুষ তথ্য বিভ্রান্তি ও গোপনের অভিযোগ তুলেছেন। এর ফলে মানুষের ভরসাও দুর্বল হয়েছে রাজ্য সরকারের প্রতি।
একইসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে মাথাপিছু ১০ কেজি চাল এবং পরিবার পিছু দু কেজি ডাল রাজ্যের সব মানুষ পাননি বলেও অভিযোগ করেছেন বামেরা। বিভিন্ন রাজ্যে কর্মরত শ্রমিক অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষের জন্য সরকারি প্রকল্প ঘোষণা হলেও তারা সেই প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ বামেদের। একই সঙ্গে গণবণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে বিনামূল্যে মাস্ক, সাবান ও স্যানিটাইজার সরবরাহ করারও দাবি করেছেন তারা।
বামেরা দাবি করেছেন, লকডাউনের সময়কালে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের দামে ছাড় দেওয়া হোক। শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের স্পষ্ট ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে তাদের।পরীক্ষার, অনিশ্চিয়তা, অনলাইন শিক্ষার সীমাবদ্ধতা এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি বৃদ্ধির মত একাধিক বিষয়ে চাপের মুখে পড়েছে পড়ুয়া, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। এই বিষয়গুলিকে বিশেষ নজর দিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এছাড়াও পেট্রোপণ্যের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি নাভিশ্বাস তুলেছে সাধারন মানুষের। এক্সাইজ ডিউটি ও শুল্ক ক্রমশ বাড়ানোর ফলে কেন্দ্র রাজ্য সরকার লাভের পরিমাণ বাড়লেও বোঝা চেপেছে মানুষের কাঁধে।