ভোট মিটতেই শুরু রাজনৈতিক হিংসা, বেলঘড়িয়ায় সিপিআইএমের পার্টি অফিস ভাঙ্গচুর

আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ৩ মার্চ: ভোট মিটতেই উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর মহকুমাতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক হিংসা। সারা রাজ্যজুড়ে সবুজ ঝড়ে বেশিরভাগ জায়গাতেই বিরোধীশূন্য পৌর বোর্ড গঠন শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বেলঘরিয়া, ভাটপাড়া আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বুধবার রাতে বেলঘড়িয়া বিটি রোড সংলগ্ন সিপিআইএমের পার্টি অফিস ভাঙ্গচুর করা হয় বলে অভিযোগ উঠল শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কামারহাটি পৌরসভার অন্তর্গত ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে।

ওই ওয়ার্ডে সরকারি আবাসনের ভিতরে দীর্ঘদিন ধরে একটি সিপিআইএমের পার্টি অফিস আছে। সিপিআইএমের দক্ষিণ-পশ্চিম শাখা এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রীয় পার্টি অফিস হিসেবে এখান থেকে কাজ পরিচালনা হত। সেই পার্টি অফিসে গতকাল রাতে ভাঙ্গচুর চালানো হয় পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া হয়, লাইট ভেঙ্গে দেওয়া হয়। সিপিএমের পক্ষ থেকে অভিযোগের তীর সরকার পক্ষের দলের দিকে। এই গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে।

এদিন এই ঘটনা সম্পর্কে সিপিআইএম স্থানীয় নেতা কর্মীরা বলেন, “পৌরসভা বিরোধী শূন্য করেছে এখন পাড়াকেও বিরোধী শূন্য করার চেষ্টা চলছে। তৃণমূল যে ভাবে গায়ের জোরে ভোট করিয়েছে সেই ভাবেই বিরোধীদের পার্টি অফিস ধ্বংস করতে চাইছে।”
তবে কামারহাটির প্রাক্তন পৌর প্রধান গোপাল সাহা এই গোটা ঘটনা সম্পর্কে বলেন, “আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। আমরা কখনই কোনো বিরোধী দলের পার্টি অফিস ভাঙ্গার বিষয়ে জড়িত নই। আমিও জানতে চাই এই ঘটনা করা ঘটিয়েছে।”

অপর দিকে ভোটের ফল বেরনোর পর ভাটপাড়া ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল। গত কাল রাতে ভাটপাড়া পৌরসভার ১৭ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের একটি পার্টি অফিস ভাঙ্গচুর করার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। এদিন
ভোররাতে মেঘনা মিলের শ্রমিক লাইনে বোমাবাজি ঘটনা ঘটে। দুষ্কৃতীরা পরপর দুটি বোমা ছোড়ে বলে অভিযোগ। যার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।

মেঘনা মিলের শ্রমিক সুনীল উপাধ্যায় তার বাড়ির সামনেই ২ টো বোমা চালায় দুষ্কৃতীরা।
যার বাড়িতে বোমা পড়েছে সেই সুনীল উপপাধ্যায় এই বছর বিজেপির বুথ এজেন্ট ছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি সাংসদ অর্জুন সিং ঘনিষ্ট বলেও পরিচিত। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসেন সংসদ অর্জুন সিং এবং তার পুত্র বিধায়ক পবন সিং। এদিন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতিরাই এই বোমা মেরেছে। সাংসদ জানান “পুলিশ নিস্ক্রীয়। বিজেপি কর্মী নেতাদের ওপর ফের আক্রমণ করতে পারে দুষ্কৃতীরা। আমরা বারবার বলেছি কঠোর পদক্ষেপ নিতে কিন্তু পুলিশ নিষ্ক্রীয়।”

এই ঘটনা সম্পর্কে বিজেপি কর্মী সুনীল বাবু বলেন, “আমার সাথে অর্জুন সিংয়ের ঘনিষ্টতা আছে আমি বিজেপি করি তাই আমাকে ভয় দেখানোর জন্য এই বোমাবাজি করছে।”

তবে জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের অভিযোগ, বোমা মারার ঘটনা সাজানো ঘটনা। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের যোগ নেই। তবে সোমনাথ শ্যাম আশ্বাস দিয়েছিলো, ভোট পরবর্তী’ কোনো হিংসা আর হবে না। তবে কেন আবার বোমা পড়লো বিজেপির এজেন্টের বাড়ির সামনে, এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সোমনাথ শ্যামের সাফ জবাব কেউ হিংসা ছড়ালে পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। তবে এই সমস্ত ঘটনার তদন্ত শুরু করছে পুলিশ প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *