আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ২৩ নভেম্বর: বিএসএফ-পুলিশের নজর এড়িয়ে দেদার গরুপাচার হিলিতে। দিনের আলোতেই তোড়জোড় পাচারকারীদের। প্রশাসনের ভূমিকায় সরব বাসিন্দারা। ক্ষোভের সুর সাংসদের গলাতেও। শীতের পারদ চড়তেই বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে সীমান্ত শহরে হুড়হুড়িয়ে ঢুকছে বড় আকারের গরু। দিনের আলোতে পুলিশের চোখের সামনে দিয়ে শয়ে শয়ে গোরু সীমান্তবর্তী এলাকায় এনে জমা করছে পাচারকারীরা। সন্ধ্যের অন্ধকার নামতেই যেগুলিকে পাচার করা হচ্ছে বাংলাদেশে। উন্মুক্ত সীমান্তের বিস্তৃর্ণ এলাকা দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে এমন রমরমা কারবার চললেও, নিশ্চুপ কেন রয়েছে প্রশাসন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সীমান্ত শহরেরই বাসিন্দারা। যদিও ঘটনা নিয়ে সরাসরি শাসক দলের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।
সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচারের কাটমানি দিয়েই দক্ষিণ দিনাজপুরে চলছে শাসক দলের নেতারা। বিএসএফের একা প্রচেষ্টায় সম্ভব নয়, পুলিশ কোনও সহযোগিতা করছে না তাদের। পুলিশ নিজেও কাজ করতে পারছে না। কেন না তাদের উপর শাসক শিবিরের চাপ রয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশের তিনদিক সীমান্ত বেষ্টিত জেলা দক্ষিণ দিনাজপুর। জেলার ২৫২ কিলোমিটার বর্ডার এলাকার মধ্যে ২৭ কিলোমিটার এলাকা আজো কাঁটাতার বিহীন উন্মুক্ত অবস্থায় রয়েছে। যার বেশিরভাগ এলাকায় রয়েছে হিলিতে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হিলির গোসাইপুর, ঘনাপাড়া প্রভৃতি এলাকা দিয়ে চলছে দেদার গরু পাচার। দিনের আলোতে এক প্রকার পুলিশের সামনে দিয়েই ভিনরাজ্য থেকে আনা বড় মাপের গরুগুলি মজুত করা হচ্ছে সীমান্তবর্তী এলাকায়। সন্ধ্যে নামতেই বিএসএফের নজর এড়িয়ে সেগুলি উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে পার করা হচ্ছে বাংলাদেশে।
সূত্রের খবর, প্রতি রাতে হিলির উন্মুক্ত ওই এলাকা দিয়ে প্রায় ১০০ থেকে ২০০ টি গরু পাচার চলছে বাংলাদেশে। এপারে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় কেনা গরু ওপারে গেলেই মিলছে ২ লক্ষ টাকা, আবার কখনো বা তাঁর চেও বেশি মিলছে পাচারকারীদের। পুলিশ ও বিএসএফের একাংশের যোগসাজশেই চলছে এমন অবৈধ পাচারকাজ বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
হিলির ব্লক তৃণমূল সভাপতি মিহির সরকার জানিয়েছেন, বর্ডার সিল রয়েছে হিলিতে। তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার করছে বিজেপি।
সীমান্তে গরু পাচারের রমরমা কারবার নিয়ে সিপিএম লোকাল কমিটির সম্পাদক কাঞ্চন মুন্সি বলেন, পুলিশ প্রশাসন ঠিক থাকলে সীমান্তে একটিও পাচার হবে না।
ডিএসপি সদর ধীমান মিত্র জানিয়েছেন, সীমান্তে গোরু পাচার বন্ধ করতে কড়া হাতে ইতিমধ্যে ৪০ টি গরু আটক করা হয়েছে বিভিন্ন এলাকা থেকে।