জে মাহাতো, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ১৯ ডিসেম্বর: মাত্র ৪৫ মিনিটেই পাওয়া যাবে কোভিড টেস্টের ফলাফল। ‘পজিটিভ’ না ‘নেগেটিভ’ জানিয়ে দেবে আইআইটি খড়গপুরের যুগান্তকারী আবিষ্কার ‘কোভিরাপ’ (Covirap)। দেশে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন। ‘পজিটিভ’ রিপোর্ট আসছে ৩-৪ লক্ষ মানুষের। এ রাজ্যেও হাজার মানুষ করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন প্রতিদিন। এই পরিস্থিতিতে, আরটি-পিসিআর অর্থাৎ র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টই বড় ভরসা। কিন্তু, র্যাপিড অ্যান্টিজেনে অনেক সময় নেগেটিভ রিপোর্ট এলেও, আরটি-পিসিআরে তা পজিটিভ হয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে, আরটি-পিসিআরের রিপোর্ট আসতে ১-২ দিন দেরি হচ্ছে। সর্বোপরি, আরটি-পিসিআরের কয়েকটি ল্যাবে কোভিড পরীক্ষার এই বিশাল চাপ সামাল দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে, মাত্র ৪৫ মিনিটে কোভিড পরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে, এমন যন্ত্র আবিষ্কার করল আইআইটি খড়্গপুর। আইআইটি সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত এবং কম খরচে করোনার ‘রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড’ (আরএনএ) পরীক্ষার নিখুঁত রিপোর্ট পাওয়া যাবে কোভিরাপের মাধ্যমে। এই যন্ত্র বাজারজাত করার অনুমোদনও পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, করোনার প্রথম পর্যায়ের সংক্রমণের পরই, দ্রুতগতিতে এবং কম খরচে করোনা পরীক্ষা করার বা আরএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে রিপোর্ট পাওয়ার গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিল আইআইটি খড়্গপুর। প্রতিষ্ঠানের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী ও বায়ো-সায়েন্সের অধ্যাপক অরিন্দম মণ্ডলের নেতৃত্বে চলছিল গবেষণা। তাঁদের দাবি, বর্তমানে করোনা পরীক্ষার জন্য যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তা হয় ব্যায়বহুল, না হয় সময় সাপেক্ষ। প্রয়োজন হয় উপযুক্ত পরিকাঠামো ও দক্ষ কর্মীর। তাই গবেষণা চালানো হচ্ছিল, কিভাবে সহজে ও স্বল্প খরচে নিখুঁত রিপোর্ট পাওয়া যায় তা নিয়ে। সাফল্য এসেছিল ২০২০’র জুলাইতে। তবে, নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বাজারজাত করার ছাড়পত্র মিলল গত ২১ এপ্রিল।
উল্লেখ্য যে, দিনকয়েক আগেই আমেরিকার একটি সংস্থাকে বিপুল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এই প্রযুক্তি দেওয়া হয়েছে আইআইটি খড়্গপুরের তরফে। তাঁরা এবার এই যন্ত্র বাজারজাত করবে। অন্যদিকে, রাজধানী দিল্লির একটি সংস্থাকেও এই প্রযুক্তি দেওয়া হয়েছে। কাজেই খুব তাড়াতাড়ি এ দেশের বাজারেও এসে যাবে ‘কোভিরাপ’। আইআইটি খড়্গপুরের অধিকর্তা ড: ভি. কে তেওয়ারি বলেন, ‘কঠিন সময়ে এই যন্ত্র বাজারে আসতে চলেছে। স্বল্প মূল্যেই ভারতীয় বাজারে পাওয়া যাবে।’ জানা গেছে, যন্ত্রের দাম ৫ থেকে ১০ হাজারের মধ্যে হবে। প্রতিবার ব্যবহৃত কিটের দাম হবে ১৫০ টাকার থেকেও কম। অথচ, আরএনএ’র মাধ্যমেই যে আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হয়, সেই মেশিনের দাম আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকা। অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘এই যন্ত্রের মাধ্যমে মাত্র ৪৫ মিনিটে নিখুঁত ফলাফল পাওয়া যাবে।’