আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ১৬ আগস্ট: জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার করা সত্বেও সঙ্কটজনক অবস্থায় থাকা রোগীকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি নেওয়া হল না। ঠিকমত চিকিৎসা না পেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। কয়েকদিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন পাঁশকুড়ার গোগ্রাস গ্রামের ৬৫ বছর বয়সের এক ব্যক্তি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ নিয়ে আসা হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে। প্রথমে রোগীকে হাসপাতালে আইসোলেশন করে রাখা হয় এবং র্যাপিড টেস্ট করা হয়। পরে লালা রস সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
রোগীর সঙ্গে আসা পরিবারের লোককে জানানো হয় রিপোর্ট আসতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে। এই কথা বলার কিছু সময় পরেই হাসপাতালের তরফ থেকে জানানো হয় রোগীর রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে এবং জেলা হাসপাতাল থেকে পাঁশকুড়া নিয়ে যাওয়ার কথা জানানো হয় হাসপাতালে তরফ থেকে। পাঁশকুড়ার বড়মা কোভিড হাসপাতালে যাওয়ার পর সেখানে চিকিৎসক প্রাথমিক ভাবে রোগীকে দেখে জানায়, রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক তাই আইসিইউতে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু বড়মা হাসপাতালে আইসিইউ বেড খালি না থাকায় রোগীকে ভর্তি নেয়া সম্ভব নয় এমনটাই পরিবারের লোক কে জানানো হয় বড়মা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তরফ থেকে। সেখান থেকে তাকে চণ্ডীপুরে বা অন্য কোনও কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। এরপর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পাঁশকুড়া বড়মা হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে মৃত্যু হয় ওই রোগীর।
এইপরিস্থিতে রোগীর পরিবার রোগীকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালের আইসিইউতে বেড খালি না থাকা সত্ত্বেও কেন জেলা হাসপাতাল থেকে সেখানে পাঠানো হয় এবং কেন সেখানে কোনও চিকিৎসা না করে পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতাল থেকে চণ্ডীপুরে বা অন্য কোথাও পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়? পরিবারের আরও অভিযোগ, মৃত্যুর পর কয়েক ঘন্টা কেটে গেলও মৌখিকভাবে জানালেও এখনো পরিবারের হাতে দেওয়া হয়নি মৃতদেহ বা কোনও করোনা টেস্টের রিপোর্ট। ফলে মৃতদেহ নিয়ে কি হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়ছেন পরিবারের লোকেরা। মৃতদেহ এখন তমলুক জেলা হাসপাতালের মর্গে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত হাসপাতালের তরফ থেকে জানানো হয়েছে মৃতদেহ দেওয়া যাবে না।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারবার চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিলেও এখনো ঠিকভাবে চিকিৎসা পাচ্ছেন না রোগীরা আজকের ঘটনা আবার সেটাই প্রমাণ করল।