সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১৩ আগস্ট: কারও কোনও সাহায্য না পেয়ে হেঁটে হাসপাতালে যাওয়ার পথে মৃত্যু হল করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তির। বৃহস্পতিবার এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বামনগাছি এলাকার দিঘা সরদার পল্লিতে।
পরিবার সূত্রের খবর, দিন ১০ আগে দাঁতের যন্ত্রণা নিয়ে অসুস্থ হন দিঘা সরদা পল্লির বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তি। সেই সঙ্গে জ্বর। চিকিৎসা করাতে ছোট জাগুলিয়া হাসপাতালে যান বিমলবাবু। তার শরীরে জ্বর থাকায় সেখানে তাঁর করোনা টেস্ট হয়। ১০ দিন কেটে গেলেও রিপোর্ট হাতে পাননি তিনি। খবর পেয়ে আশা কর্মীরাও বাড়িতে আসেন। তাঁদের পরামর্শে চলে চিকিৎসা। দিন দুই ধরে অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সেই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। আশা কর্মীদের জানালে তাঁরা জানিয়ে দেয় এই মুহূর্তে উত্তর ২৪ পরগনায় কোনও হাসপাতালে বেড খালি নেই, বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়িতে থাকা অবস্থায় তাঁর অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট ওঠে। বারাসত হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে খবর দিলে অ্যাম্বুলেন্স চালক যেতে রাজি হয়নি। তাই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন বিমানবাবু। আশপাশের ভ্যান চালকদের হাতে পায়ে ধরেন তাঁর স্ত্রী। তবুও কেউ যেতে রাজি হয় না। ভ্যান চালকরা ওই রোগী দেখে আতঙ্কে ভ্যান ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর স্ত্রীর সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে বারাসত হাসপাতালে রওনা দেয় বিমানবাবু। হাঁটতে হাঁটতে তাঁর স্ত্রীকে বলেন, তুমি আমার থেকে দূরে দূরে থাকো। না হলে এই মারণ রোগ তোমাকেও ধরবে। কিছু দূর যেতেই বিমান বাবু মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্ত্রী তুলে ধরতেই তার মৃত্যু হয়। এমন অমানবিক ঘটবার সাক্ষী রইল বামনগাছির বাসিন্দারা।