দাপিয়ে বাড়ছে করোনার সংক্রামণ, ফের লকডাউন হাবড়া ও বনগাঁয়

আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১৪ জুলাই: সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে চলছে মানুষ। চলছে রাজনৈতিক দলের মিছিল মিটিং। আর সে কারণেই দাপিয়ে বাড়ছে করোনার প্রকোপ। বুধবার থেকে ফের লকডাউন করা হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগণার হাবড়া ব্লক সহ বনগাঁ মহকুমার কয়েকটি পঞ্চায়েতে। বনগাঁ শহরে নির্ধারিত সময় বেঁধে দোকান খোলা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে হাবড়ায় নতুন করে বেশ কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ‘‘সোমবার ১ মহিলা সহ ২ জনের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। তারা করোনা পজি়টিভ। এছাড়া মছলন্দপুরে মাছ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে এক সরকারি কর্মীও আক্রান্ত হয়েছেন। হাবড়া শহরে এদিন পর্যন্ত করোনা পজি়টিভের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৭। এর ফলে গোটা হাবড়া ব্লক বুধবার থেকে সাত দিনের জন্য লকডাউনের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসন।

অন্য দিকে বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ, সোমবার তাঁর রিপোর্টে পজিটিভ আসে। জানা গিয়েছে, তিনি বুধবার শেষ সমিতিতে এসেছিলেন। সোমবার সমিতির অফিস স্যানিটাইজ করা হয়েছে। ইতি মধ্যে সমিতির বেশ কয়েক জনের লালারস পরীক্ষা করানো হয়েছে রিপোর্ট আসার অপেক্ষায়। বনগাঁ ব্লকের কালুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা এক পরিযায়ী শ্রমিকের করোনার রিপোর্ট পজি়টিভ হয়েছে। তাঁর রিপোর্ট এসেছে রবিবার।

পঞ্চায়েত প্রধান মুক্তি সরকার বলেন, ‘‘রবিবার একজনের পজি়টিভ রিপোর্ট এসেছে। গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সোমবার মোট ৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার থেকে সাত দিনের জন্য এলাকার বাজার হাট বন্ধ রাখা হবে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লকের রোজই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার পর্যন্ত ব্লকে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩৮ জন। রবিবার পাল্লা এলাকার এক পরিযায়ী শ্রমিকের রিপোর্টও করোনা পজি়টিভ হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।

করোনা সংক্রমণ রুখতে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে বনগাঁ প্রশাসন৷ সোমবার বনগাঁ পুরসভার চন্দ্রিকা সভা গৃহে এক বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুর প্রশাসক শংকর আঢ্য, মহকুমা শাসক কাকলি মুখার্জি, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অশেষ বিক্রম দস্তিদার, এছাড়াও বনগাঁর বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা৷
এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় আগামী বুধবার সকাল ছ’টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত খোলা থাকবে বনগাঁর বিভিন্ন মাছ ও সবজি বাজারগুলি। বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে অন্যান্য সমস্ত দোকান। পাশাপাশি যাত্রীবাহী অটোরিকশাতে দুজনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না বলেও এদিন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, প্রতিটি অটোতে যাত্রী ও চালকের মাঝে প্লাস্টিকের আস্তরণ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাস্ক পড়া না থাকলে পেট্রোল পাম্প থেকে যাতে তেল না দেওয়া হয় এবং পাশাপাশি কোনি দোকানদার মাস্ক বিহীন অবস্থায় যাতে কোনো গ্রাহকের কাছে কোনো দ্রব্য বিক্রি না করেন সে দিকে কড়া নজর রাখা হবে৷ বুধবার থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত এই নিয়ম বলবৎ থাকবে৷ আগামী ১০ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ফের আলোচনায় বসবেন প্রশাসনিক কর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *