আমাদের ভারত, ২৪ এপ্রিল: এখনো পর্যন্ত এই রাজ্যে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত করোনা কারণে। আর ৩৯ জনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে করোনা পজিটিভ ইন্সিডেন্টাল ছিল। আজ করোনা সংক্রান্ত তথ্য দিতে গিয়ে নবান্নে প্রেস কনফারেন্সে এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। করোনায় মৃত্যু নিয়ে এইভাবে তথ্য আগে রাজ্য সরকার দেয় নি। তাহলে কি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের চাপে পড়েই এই তথ্য দিতে বাধ্য হল রাজ্য সরকার? রাজ্য সরকারের দেওয়া আজকের করোনায় মৃত্যুর সংখ্যার বিস্তারিত রিপোর্ট দেখে এমনই প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোন রোগী মারা গেলে, তার মৃত্যু করোনার কারণেই হয়েছে নাকি অন্য কোনো কারণে হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে ৩ এপ্রিল একটি বিশেষ অডিট কমিটি গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। আজ নবান্নে প্রেস কনফারেন্সে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেন, সেই কমিটিতে এখনো পর্যন্ত ৫৭ জনের করোনা সংক্রমনের মৃত্যুর ঘটনা রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল। ওই কমিটি জানিয়েছে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিতভাবে করোনার কারণেই। তবে বাকি ৩৯ জনের মৃত্যুর ক্ষেত্রে করোনা ছিল ইন্সিডেন্টাল। এই ১৮ জনের মৃত্যুর মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।
কেন্দ্র সরকারের আন্তঃ মন্ত্রকের দল করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন তুলেছেন। আর তাতেই সম্ভবত বাধ্য হয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করছে রাজ্য সরকার বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। এতদিন ধরে করোনায় রাজ্যে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা জানানো হয়নি। সব সময় বলা হয়েছে এক্টিভ রোগীর সংখ্যা অর্থাৎ এই মুহূর্তে কতজন রোগীর শরীরে করোনা জীবাণু সক্রিয় রয়েছে সেই সংখ্যা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে মৃত্যুর সময় শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থাকলেও নবান্নের তৈরি অডিট কমিটির যাদের মৃত্যুর পেছনে অন্য কারণকে দায়ী করেছেন সেই সংখ্যাও রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের বুলেটিনে প্রকাশ করা হয়নি।
আর সেই জন্যই বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে চিকিৎসকদের একাংশ বারবার তথ্য গোপনের অভিযোগ এনেছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। রাজ্য গঠিত বিশেষ কমিটি বলেছে করোনা থাকলেও মৃত্যুর অন্যান্য কারণ গুলি হল কিডনির অসুখ, লিউকোমিয়া, মাল্টি অর্গান ফেলিওর, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনের মত রোগ। ওই ৫৭ জনের মৃত্যুর কারণের কমিটির পাঠানো বিস্তারিত রিপোর্ট কেন্দ্রীয় দল আসার পর শুক্রবার প্রথম সামনে এলো। সেই কারণেই অনেকে বলছেন কেন্দ্রীয় দলের তদন্তমূলক প্রশ্নের সামনে নাস্তানাবুদ হয়ে রাজ্য এই তথ্য সামনে আনতে বাধ্য হয়েছে।
তবে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তার বক্তব্য এক্সপার্ট কমিটির কাছে একটি কম্পাইল্ড রিপোর্ট তারা বেশ কিছুদিন ধরেই চেয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে সেই রিপোর্ট শুক্রবার তাদের হাতে এসেছে।
মুখ্য সচিব আরও জানিয়েছেন গত ২৪ ঘন্টায় এরাজ্যে আরও ৫১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ হাওড়ার বাসিন্দা। এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা একটিভ রোগীর সংখ্যা ৩৮৫। সুস্থ হয়েছেন ১০৩। রাজ্যের মোট স্যাম্পল টেস্ট হয়েছে ৮ হাজার ৯৩৩। তার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় টেস্ট হয়েছে ৯৪৩ টি।