স্বেচ্ছাচার, তাৎক্ষণিক আবেগ আর দখলের মনোভঙ্গির ফল: ডঃ অচিন্ত্য বিশ্বাস

আমাদের ভারত, ২৭ মে: রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার চেষ্টা স্বেচ্ছাচার, তাৎক্ষণিক আবেগ আর দখলের মনোভঙ্গির ফল বলে মন্তব্য করলেন প্রবীন শিক্ষাবিদ ডঃ অচিন্ত্য বিশ্বাস।

ভারতীয় জাদুঘরের অছিপরিষদের সদস্য তথা প্রাক্তন উপাচার্য অচিন্ত্যবাবু এই প্রতিবেদদকে জানান, “পশ্চিমবঙ্গে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি স্থানীয় চাহিদা মেটাতে তৈরি হয়েছে। সেগুলির নিজস্ব দৃষ্টির তেমন ছাপ নেই। বিশ্বভারতীর প্রতিস্পর্ধী ‘বিশ্ববঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে’র কী হল? সবই স্বেচ্ছাচার, তাৎক্ষণিক আবেগ (বলা ভাল কলতলার ঝগড়ুটে মানসিকতা) আর দখলের মনোভঙ্গির ফল।

বৃহস্পতিবার মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণা শুনে মনে হল, ওই বিকৃত বিপজ্জনক মানসিকতা আরো প্রসারিত হচ্ছে! রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী! এটা দিবা স্বপ্ন? মায়া না মতিভ্রম! উনি এখন যে অবস্থায়, তাতে মনে হয় আড়ালে থেকেই এ কাজটি করা যেত। ‘ইচ্ছা’ টুকু জানালেই হত। হয়ত এখন সব পার্শ্বচরদের ঠিক বিশ্বাস করতে পারছেন না। মাননীয় রাজ্যপালকে ‘দেখে নিতে’ চাইছেন ওঁরা। কিন্তু বিল তো পাঠাতে হবে তাঁর কাছেই! উনি ঝুলিয়ে রাখলে কী হবে? সংবিধান তাঁকে এই অধিকার দিয়েছে। এতগুলি মন্ত্রক সামলে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রটি চালাবেন কী করে! মানসিকভাবে ‘মেগালো ম্যানিয়া’ হলে তাঁর বিশ্রাম দরকার।

শিক্ষা তো যৌথ তালিকাভুক্ত। কেন্দ্র সরকার, ইউজিসি অন্যান্য অর্থলগ্নি সংস্থার মধ্যে যোগাযোগ রাখতে হয়। তারা কি শুধুই টাকা ঢালবে? মুখ্যমন্ত্রী তো প্রশাসনিক প্রধান। জেলাগুলিতে যেসব ‘অবান্তর’ বৈঠক করছেন, সেখানে প্রশাসন আর দল একাকার হচ্ছে। এর ফলে এককেন্দ্রিক চরম অব্যবস্থা হচ্ছে। উনি সবাইকে নির্দেশ দিচ্ছেন! আচার্য হলে উচ্চ শিক্ষায় এই হবে।

বাম আমলে ‘অনিলায়ন’ ছিল, বলা হত উপাচার্যরা আলিমুদ্দিনে অনিল বিশ্বাসের ঘলে স্লিপ দিয়ে বেঞ্চে অপেক্ষা করতেন। এখনকার পরিস্থিতিও তাই। আচার্য হলে উনি কী করবেন বলতে পারব না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভিন্ন সুর, মত, বিতর্ক থাকবে না— তা নিশ্চিত।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *