ডাক্তার প্রশান্ত কুমার ঝরিয়াৎ
আমাদের ভারত, ৯ ফেব্রুয়ারি: এখন প্রায় দেখছি চেম্বারে রুগীরা আসছেন চোখ লাল করে। এসে বলছেন ডাক্তারবাবু চোখ কড় কড় করছে, সকালে দুই চোখের পাতা জুড়ে যাচ্ছে আবার মাঝে মাঝে ব্যথাও করছে। সুধী পাঠক বৃন্দের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছেবনা যে আমি কনজাংটিভাইটিস রোগের কথা বলছি।
চোখের সাদা অংশটি হল কনজাংটিভা। এই অংশে ইনফেকশন হলে সাদা অংশটি লাল হয়ে ওঠে। অনেক কারনেই কনজাংটিভাইটিস হতে পারে। তার মধ্যে ভাইরাস জনিত, ব্যাকটেরিয়াল জনিত এবং এলার্জি জনিত কারনগুলি হল অন্যতম।
এই রকম ঠাণ্ডা থেকে গরম পড়ার সময় অথবা একবার ঠান্ডা আর একবার গরম এই রকম আবহাওয়ার সময় পরিবেশে ভাইরাস জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী হয়। সেই রকমই একটি রোগ হল কনজাংটিভাইটিস। এই রোগটি তেমনভাবে খুব বেশি ক্ষতিকারক না হলেও সাধারণ স্বাস্থ্যবিধিগুলি না মেনে চললে এখান থেকেই চোখের মারাত্মক সংক্রমণ হতে পারে। তাই এই রোগটি হলে কিছু সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখের পাতা জুড়ে গেলে হালকা গরম জলে তুলো ভিজিয়ে চোখের পাতা পরিষ্কার করুন।জোর করে টেনে চোখের পাতা খুলতে যাবেন না, এতে চোখে আঘাত লেগে রক্ত পাত হতে পারে। চোখ বেশি রগরাবেন না বা চোখে বারে বারে হাত দেবেন না।অপরিষ্কার কাপড় বা রুমাল দিয়ে চোখ পরিস্কার করবেন না, এতে চোখে সংক্রমণ হয়ে রোগটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
মাঝে মাঝে পরিস্কার জলে চোখ পরিস্কার করুন। অযথা রোদে ঘুরবেন না। রোদে গেলে ছাতা এবং সানগ্লাস ব্যবহার করুন। এই রোগটি কিন্তু সংক্রামক তাই বাচ্চাদের থেকে দূরে থাকবেন, তাদের কিছু দিন কোলে না নেওয়াটাই ভালো।
চোখের কষ্ট খুব বেশি হলে কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
চোখের পাতা জুড়ে যাচ্ছে, অত্যন্ত বেশি পুঁজের মতন স্রাব হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে আর্জেন্টাম নাইট্রিকাম অত্যন্ত কার্যকরী ওষুধ। এর ২০০ শক্তি দিনে দুবার করে কয়েক দিন সেবন করলে নির্দোষ আরাম লাভ করা যায়।
অত্যন্ত হাজাজনক স্রাব, চোখ প্রচন্ড লাল, কড় কড় করছে, এমতাবস্থায় ইউফ্রেশিয়া ৬ দিনে কয়েকবার করে খেলে আশ্চর্যজনক ফল পাওয়া যায়।
চোখের পাতাগুলি খুব ফুলে আছে, তার সাথে ব্যথা ও চোখ জুড়ে যাচ্ছে, এপিস মেল এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
চোখ জবাফুলের মতন লাল, তৎসহ চোখের মণিকোঠায় দপ্-দপানি ব্যথা, বেলেডোনা আপনাকে নিরাশ করবে না।
এছাড়াও অনেক হোমিওপ্যাথি ওষুধ আছে যেগুলি এই রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে কিন্তু সেগুলি প্রয়োগের আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবুর সাথে আলোচনা করে ওষুধগুলির মাত্রা ঠিক করে নেবেন।