আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ৫ ডিসেম্বর: যুবকের শরীরের ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিরল। গলব্লাডারে পাথরের অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে এমনই বিরল যুবকের সন্ধান পাওয়া গেল রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শরীরের ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ উল্টোপাল্টা হওয়ায় অস্ত্রপচারে কিছুটা বেগ পেতে হয় চিকিৎসকদের। তবে দুই চিকিৎসক এবং নার্সদের ঘণ্টাখানেকের পরিশ্রমে সফল অস্ত্রোপচার করা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, বিরল অবস্থার শিকার যুবকের নাম মিজানুর রহমান। বয়স ২৭ বছর। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট মিজানুর। বাড়ি মুরারই থানার সন্তোষপুর গ্রামে। পেশায় পাথর ব্যবসায়ী। যুবকের বাবা তোফাজ্জুল হোসেন বলেন, “বছরখানেক আগে থেকে ছেলের পেটে ব্যথা হয়। প্রথমে রামপুরহাট শহরে বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে দেখিয়েছিলাম। তারা পেটের ছবি করতে বলেছিলেন। কিন্তু তা না করে এরপর ব্যাঙ্গালোরের মনিপাল হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে তারা ছবি করে জানায় ছেলের পেটে পাথর। অস্ত্রোপচার করতে হবে। আমি সেখানেই অস্ত্রোপচার করতে রাজি হয়ে যাই। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে তিনবার ঘুরিয়েছিল। তাই সেখান থেকে পালিয়ে এসে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে দেখাই। চিকিৎসক সৌরভ মাজি দেখার পর অস্ত্রোপচার করতে রাজি হন।
তিনিই জানান, একটি টিম তৈরি করে অস্ত্রোপচার করতে হবে। কারণ ছেলের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সব উল্টো ভাবে রয়েছে। চিকিৎসকের আশ্বাসে সম্মতি জানাই। এরপরেই সাফল্য মিলল”।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসক সৌরভ মাজি এবং অমিতাভ দত্ত ওই বিরল যুবকের শরীরে জটিল অস্ত্রপচার করলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন অজ্ঞানের চিকিৎসক অরূপ ঘোষ, অমিত হাজরা ও মণিশঙ্কর নাথ। সৌরভবাবু বলেন, “ওই যুবকের সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, শিরা ধমনি উল্টো রয়েছে। সাধারণ ভাবে মানুষের শরীরে ডান দিকে গলব্লাডার হয়। এর হয়েছে বাম দিকে। ফলে রোগ ধরতে কিছুটা সময় লেগেছে। তাছাড়া আমরা ডান দিকে গলব্লাডার অস্ত্রপচার করতে অভ্যস্ত। কিন্তু যেহেতু এটা ছিল বাম দিকে। ফলে আমাদের কাছে কিছুটা জটিল হয়ে পড়ে। কিছুটা ঝুঁকিও ছিল”। চিকিৎসকদের দাবি ২০ হাজার মানুষের মধ্যে এমন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ একজন মানুষের শরীরে দেখা দেখা যায়।