সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৬ জুলাই: শিক্ষার বেহাল অবস্থা প্রকাশ্যে এসে পড়লো। প্রতিদিনই টিফিনের পর স্কুল ছুটি হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরেই অভিভাবকদের কাছ থেকে এরকম অভিযোগ পেয়ে আসছিলেন। এদিন আচমকা স্কুলে হানা দেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অনসুয়া রায়। তিনি গিয়ে দেখেন বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলের পরেই ছাত্র-ছাত্রীদের ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত রয়েছেন দু’জন শিক্ষক। তারমধ্যে ১জন শিক্ষক, অপরজন শিক্ষিকা। তাদের সাফাই, অতিরিক্ত গরমের কারণে এদিনই ছাত্র-ছাত্রীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
বাঁকুড়া জেলার তালডাংরা ব্লকের আসনা জুনিয়র হাইস্কুলে প্রায় প্রতিদিনই মিড ডে মিলের পর ছুটি দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে তাজ্জব হয়ে যান জেলা সভাধিপতি অনুসূয়া রায়। স্কুলটি সভাধিপতির বাড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে। এদিন দুপুরে আচমকাই বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন সভাধিপতি। গিয়ে দেখেন মিড ডে মিল হওয়ার পরেই স্কুল ছুটি হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ জন শিক্ষক উপস্থিত রয়েছেন। তিনি বিদ্যালয় থেকেই তালডাংরার বিডিও ও তালডাংরার এসআইকে বিষয়টি ফোনে জানান। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ধমকের সুরে বলতে শোনা যায় আপনাদের ছেলে মেয়েরা ভালো স্কুলে পড়াশোনা করবে, আর এই গ্রামের ছেলে মেয়েরা স্কুলের সময়ে স্কুলে ক্লাস না করে মাঠে-ঘাটে খেলাধুলা করবে এটাই চাইছেন আপনারা।
তিনি বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ আসছিল আসনা জুনিয়র হাই স্কুল টিফিনের পর ছুটি হয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ পেতেই স্কুলে এসে দেখা গেল অভিযোগ সত্যি। ২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বসে রয়েছেন ফ্যান চালিয়ে। এভাবে স্কুল চলতে থাকলে এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে বলে তিনি অভিযোগ করেন। সমস্ত বিষয়টি তিনি বিডিওকে জানিয়েছেন বলে তিনি জানান।
বিদ্যালয় টিফিনের পর ছুটি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষিকা দীপান্বিতা দুবের সাফাই, এদিন সকাল থেকে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ ছিল। তাই অতিরিক্ত গরমের কারণে মিড ডে মিলের পর ছাত্র-ছাত্রীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিনই টিফিনের পর বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয় বলে তিনি জানান।
তালডাংরা পূর্বচক্রের এসআই দীপঙ্কর দাস বলেন, অভিযোগ পেয়েছি টিফিনে স্কুল ছুটি হওয়ার। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ডেকে পাঠিয়েছি। তবে আজ মিড ডে মিলের পর বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার বিষয়ে তাকে কিছু জানানো হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।