আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৮ মার্চ: রাস্তায় বালি বোঝাই লরি থামিয়ে প্রকাশ্যে তোলাবাজির অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনই ছবি ধরা পড়েছে রানীগঞ্জ- মোড়গ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বীরভূমের মাড়গ্রাম থানার ভোল্লা গ্রামের কাছে। রাস্তার ধারে রীতিমতো তাঁবু খাটিয়ে অস্থায়ী অফিস খুলে লরির চালকদের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায় করার অভিযোগ মাড়গ্রাম থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের এহেন ভূমিকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। ক্ষুব্ধ লরি চালকরা।
রাজ্য সরকার ওভারলোড বন্ধে ফতোয়া জারি করেছে। লরি মালিকরাও ওভারলোড বন্ধের পক্ষে। তারপরও সরকারকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অবাধে চলছে ওভারলোড। সৌজন্যে বীরভূমের মাড়গ্রাম থানার পুলিশ। প্রঙ্গত, বীরভূমের অজয় ও ময়ূরাক্ষী নদী থেকে বেশিরভাগ অবৈধ বালি ঘাট থেকে বালি তোলা হয়। সেই ওভারলোড বালি বোঝাই লরি, ডাম্পার ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে উত্তরবঙ্গ সহ বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যায়। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত জাতীয় সড়কের উপর দাঁড়িয়ে সেই সমস্ত বালি বোঝাই গাড়ি থেকে হাজার থেকে চৌদ্দশো টাকা আদায় করছে বীরভূমের মাড়গ্রাম থানার পুলিশ। সেই ছবি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। ক্যামেরা দেখে মুখ লুকিয়েছেন পুলিশ কর্মীরা। গাড়ি চালকদের অভিযোগ, চাহিদা মতো টাকা না দিলে লরি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে পুলিশকে টাকা দিতে হয়।
লরি চালকদের দাবি, এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টি বালি বোঝাই ওভারলোড লরি চলাচল করে। প্রতি লরি থেকে এক হাজার থেকে চৌদ্দশো টাকা তোলা দিতে হয় চালকদের। নিয়ম মেনে চলাচল করা আন্ডারলোড লরির চালকদেরও পুলিশকে টাকা দিতে হয়। অবশ্য সেক্ষেত্রে অর্থের পরিমান কমে। তোলা না দিলে রাস্তায় যাতায়াতের ছাড়পত্র মেলে না বলে অভিযোগ চালকদের।
পুলিশের এই বে-আবরু ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সঞ্জীব মল্লিক বলেন, “নির্লজ্জ পুলিশ। এরা দুষ্কৃতীদের সঙ্গে আপোষ করার ফলেই মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নিচ্ছে। পুলিশের তোলাবাজির কারণেই সন্দেশখালির মতো ঘটনা ঘটছে। এই সরকার যতদিন থাকবে ততদিন এই রকম তোলাবাজি চলবে”।
কংগ্রেসের রামপুরহাট শহর সভাপতি সাহাজাদা হোসেন কিনু বলেন, “পুলিশ সুপার বলেছিলেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে তোলাবাজি করা যাবে না। তারপরও পুলিশ তোলা তুলছে রাস্তায় দাঁড়িয়ে। এরা মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। শুধু নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত”।
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “পুলিশ ও তৃণমূল যৌথভাবে তোলাবাজি করছে। আমরা এর আগেও তোলাবাজির প্রতিবাদ করেছি। আগামী দিনে থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ করব।”