বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা! রিপোর্ট আসার আগেই মৃতদেহ সৎকার করা অপরাধ,বললেন অভিযুক্ত নেতা

আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৬ এপ্রিল: করোনা পরিস্থিতিতে জনমানসে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলো শাসকদল তৃণমূল। বাঁকুড়া শহরের তৃণমূল নেতা জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় বাঁকুড়া সদর থানায় বিজেপি সাংসদের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগকারী তৃণমূল নেতা জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় জানান, বিজেপি সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার নিজে একজন চিকিৎসক হয়েও বিশ্ব মহামারীর সময়ে কোনও রিপোর্ট না দেখেই বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এই আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফিভার আইসোলেশন ওয়ার্ডে মৃত্যু ঘটে দুই রুগীর। তাঁদের লালারসের রিপোর্ট আসার আগেই মৃত্যু হয়। অভিযোগ, রিপোর্ট আসার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই তড়িঘড়ি রাতের অন্ধকারে মৃতদেহ পরিবারের হাতে না দিয়ে বাঁকুড়া শহরের জনবসতিপূর্ণ লক্ষ্যাতড়া মহাশ্মশানে দাহ করে বাঁকুড়া পৌরসভা। রিপোর্ট আসার আগেই মৃতদেহ সৎকার কেন করা হচ্ছে এ প্রশ্নের উত্তরে জয়দীপবাবু বলেন, প্রশাসন তার কাজ করছে। এর পরেই ফের সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকারের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে বলেন, উনি রিপোর্ট দেখার আগেই কেন সংবাদমাধ্যমের কাছে বিবৃতি দিলেন। ঘরের চার দেওয়ালে বন্দি থেকে বিবৃতি দেওয়াই ওঁনার কাজ বলেই জয়দীপ চ্যাটার্জি অভিযোগ করেন। কিন্তু, মেডিক্যাল রিপোর্ট আসার আগেই রাতের অন্ধকারে কেন মৃতদেহ সৎকার করা হচ্ছে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্ন কার্যত বারবার এড়িয়ে যান তৃণমূল নেতা জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কে কখন মারা যাবে সেটা বলা জটিল। তারপরেই বলেন, ঐ রিপোর্ট গুলিতো নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু যদি নেগেটিভ না এসে পজিটিভ হতো, তার দায় কে নিত? এই প্রশ্নেরও কোনও জবাব মেলেনি এই তৃণমূল নেতার কাছ থেকে।


ছবি: তৃণমূল নেতা জয়দীপ চ্যাটার্জি।

বিজেপি সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকারের বক্তব্য, তাঁর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি সৃষ্টির যে অভিযোগ ঐ তৃণমূল নেতা এনেছেন, সেই অভিযোগে খোদ রাজ্য সরকার নিজেই অভিযুক্ত। এই করোনা পরিস্থিতিতে রিপোর্ট আসার আগেই মৃতদেহ সৎকার করাটা অপরাধমূলক কাজ দাবি করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন মৃতের পরিবার ও বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার মানুষকে টেনশনে রাখা হলো? এই অন্যায়ের কৈফিয়ত রাজ্য সরকারের দেওয়া উচিৎ। বিজেপি সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার আরও বলেন, তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন তা জেলাশাসককেও জানিয়ে এসেছেন। পাশাপাশি পাঁচ দফা লিখিত প্রস্তাব করোনা মোকাবিলার জন্য তিনি জমা দিয়েছেন।

তাঁর বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সাংসদ বলেন, আদালতে মামলা উঠলে রাজ্য সরকার নিজেই অভিযুক্ত হয়ে যাবে। কোন অধিকারে ও কার অনুমতিতে রিপোর্ট আসার আগেই তড়িঘড়ি মৃতদেহ সৎকার হলো এ প্রশ্ন উঠবেই। তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতিতে রাতের অন্ধকারে মৃতদেহ সৎকার করে রাজ্য সরকারই যেখানে অভিযুক্ত সেখানে তার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *