আমাদের ভারত, ৩১ মে: রাজনৈতিক ক্ষমতা বন্টনেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রদায়িক মানসিকতা রয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের ইস্যুতে এমনটাই দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, হিন্দু নেতা অনুব্রত মণ্ডলের হাত থেকে বীরভূমের ক্ষমতা কেড়ে মুসলিম নেতা কাজল শেখের হাতে তুলে দিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ অনুব্রত মণ্ডলের ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “একটা অডিও ক্লিপে শুধু খেলা ঘোরেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন অনুব্রত মণ্ডলকে ছেড়ে কাজল শেখের কোলে চাপার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে দেন, এই মন্তব্যকে যেন রাজনৈতিকভাবে নেওয়া হয়, আক্ষরিক অর্থে যেন না নেওয়া হয়।
তাঁর দাবি, রাজনৈতিকভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম জেলার ক্ষমতা তাঁর দলের মুসলিম নেতার হাতে তুলে দিতে চাইছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সাম্প্রদায়িক প্রবণতা রয়েছে। এরপরই তিনি দাবি করেন, আগে রাজ্যে প্রশাসনিক স্তরে আধিকারিক নিয়োগের ক্ষেত্রে ধর্মের নিরিখে আঞ্চলিক জনসংখ্যাকে গুরুত্ব দেওয়া হতো না, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসন কালে তা হচ্ছে।
ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আমরা এর আগে দেখেছি জেলার ডেমোগ্রাফি বা জনবিন্যাসের উপর নির্ভর করে আধিকারিক নিয়োগের কোনো সম্পর্ক থাকত না, কিন্তু এখন লক্ষ্য করে দেখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবণতা থাকে কোনো জেলাতে যদি ৩০ শতাংশ বা তার ওপরে মুসলিম থাকে সেই এলাকার ডিএম, এসপি, এসডিও, এসডিপিও মুসলিম সম্প্রদায়ের আধিকারিক দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ঠিক সেই ভাবেই রাজনৈতিক ক্ষমতাও হিন্দু অনুব্রত মণ্ডলের হাত থেকে তুলে মুসলিম কাজল শেখের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু তাবলে অনুব্রত মণ্ডলের কৃতকর্মের সঙ্গে বিজেপি কখনো আপোষ করবে না বলে স্পষ্ট করে দেন তিনি। সুকান্ত মজুমদার বলেন, অত্যন্ত জঘন্য ভাষা ব্যবহার করেছেন অনুব্রত মণ্ডল। তা নিয়ে কোনো সহানুভূতি নেই। তবে শুধু অনুব্রত মণ্ডলই পুলিশের সাথে এভাবে কথা বলেন সেটা ভাবলে আপনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। তাঁর দাবি, তৃণমূলের ৯০% নেতা পুলিশের সাথে এভাবেই কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী আইএএসদের সঙ্গে কোন ভাষায় কথা বলেন খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, আইসি লিটন হালদারকে ফোনে অশালীন ভাষায় হুমকি দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর স্ত্রী মাকে নিয়েও কুৎসিত মন্তব্য করেছেন। সেই ঘটনায় শনিবার বোলপুর থানায় হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল অনুব্রতকে। কিন্তু অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। তার বদলে চারজন আইনজীবীকে এসডিপিও-র দপ্তরে পাঠান অনুব্রত। তাতে কোনো লাভ হয়নি। বীরভূমের একদা দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে রবিবার ফের হাজিরা দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে।