শ্রীরূপা চক্রবর্ত, আমাদের ভারত, ২৬ জুন:
মুখ্যমন্ত্রী মাঝে মাঝেই দিল্লিতে ভিক্ষে করতে যান এবারেও যেতে পারেন। কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু বাংলার আবাস যোজনার নাম বদলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা না করলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের টাকা রাজ্য পাবে না। মমতাকে এভাবেই পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মুখ্যমন্ত্রী ভুল তথ্য দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ বিজেপির রাজ্য সভাপতির।
প্রসঙ্গত সোমবার বর্ধমানের সভায় মমতা বলেছেন, বাংলা আবাস যোজনার নামে টাকা না পেলে তিনি দিল্লি যাবেন। তাঁর কথায় বাংলার নাম দিয়ে প্রকল্প করলে দোষ কিসের? বলা হচ্ছে বাংলার নাম থাকলে নাকি টাকা দেবে না। মমতার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখা হচ্ছে। দরকারে তিনি দিল্লি যাবেন।
আর এই বক্তব্যের পাল্টা দিতে গিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মাঝে মাঝেই দিল্লিতে ভিক্ষে করতে যান এবারেও যেতে পারেন। কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু বাংলার আবাস যোজনার নাম বদলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা না করলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের কোনো টাকা রাজ্য পাবে না।”
বিজেপি বারবারই অভিযোগ করে এসেছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে বাংলায়। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার যে প্রকল্পের টাকা দিচ্ছে সেই প্রকল্পের নামও বাংলায় এসে বদলে ফেলা হচ্ছে এটা যুক্তিযুক্ত নয়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বাংলায় আসার পরে হয়ে যায় বাংলা আবাস যোজনা। সম্প্রতি কেন্দ্র সরকার এই নিয়ে কড়া বার্তা দেয়। এমনকি একটি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল বিষয়টি পর্যবেক্ষণের জন্য রাজ্যে আসছে।
কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রক এই প্রকল্প সম্বন্ধে সম্প্রতি জানিয়েছিল আসল নামে প্রকল্প না চালালে অনুদান দেওয়া হবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, ২০১৭ সালে এই নিয়ে রাজ্যসরকারকে কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ১২ মে ফের চিঠি পাঠায় কেন্দ্র। কিন্তু তারপরেও কোনো পদক্ষেপ করেনি রাজ্য। আর তার জেরেই কেন্দ্রীয় অনুদান বন্ধের কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম বাংলার আবাস যোজনা করার সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন গুজরাটের বাড়ি গুজরাটের নামে, উত্তরপ্রদেশেরটা উত্তরপ্রদেশের, রাজস্থানের বাড়ি রাজস্থানের, আর বাংলার নাম থাকলে কি ক্ষতি? এর উত্তরে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ভুল তথ্য দিচ্ছেন, মিথ্যা বলছেন। দেশের অন্য সব রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্প সেই নামেই চলে। শুধু বাংলার ক্ষেত্রে তা ব্যাতিক্রম। এই প্রধানমন্ত্রী আবাস প্রকল্পে ৬০ শতাংশ টাকা কেন্দ্র দেয়। ৪০ শতাংশ রাজ্যের দেওয়ার কথা, সেটা দেয় কিনা জানি না, বরং ৩০ শতাংশ কাটমানি খায়। ফলে প্রকল্পের নাম বদল না করলে কোনো টাকা পাবে না রাজ্য।” প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ করবে সরকার, বলে জানান তিনি।
১০০ দিনের কাজে যে দুর্নীতি ধরা পড়েছে তার হিসেব ও ফাইন না মেটানো পর্যন্ত সেই টাকাও রাজ্য পাবে না বলে জানান বিজেপি সভাপতি।