Clay lamp, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মাটির প্রদীপ, চাহিদা বৃদ্ধিতে খুশি কুমোড়পাড়া

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৫ অক্টোবর: ফের মাটির প্রদীপের চাহিদা বৃদ্ধিতে খুশি কুমোররা। মাটির প্রদীপে আলোকিত হয়ে উঠুক পরিবার। জেলার কুমোর পরিবারগুলির এমনটাই প্রত্যাশা।

বাঁকুড়ার চকবাজারে মাটির প্রদীপ নিয়ে আসা আঁচুড়ি গ্রামের প্রণব কুম্ভকার ও হরিমাধব কুম্ভকার বলেন, একসময় দীপাবলীতে মাটির প্রদীপের একটা ভালো চাহিদা ছিলো। কয়েকবছর চায়না লাইটের দাপটে প্রদীপের চাহিদা কমে যায়, ফের প্রদীপের চাহিদা বৃদ্ধিতে তারা খুশি। তারা জানান, এদিন ৩০ হাজার করে মাটির প্রদীপ নিয়ে এসেছেন বিক্রির জন্য।

তাদের বক্তব্য, বিগত কয়েক বছর ধরে লক্ষ্য করে যাচ্ছে যে মাটির প্রদীপের চাহিদা ফের বাড়তে শুরু করেছে। গত বছর ২৫- ২৭ হাজার করে মাটির প্রদীপ তাদের বিক্রি হয়েছিল। তার আগের বছর গড়ে ২০ হাজার করে প্রদীপ বিক্রি করেছিলেন। তাই তারা এবার মাটির প্রদীপ তৈরি ও জেলার বিভিন্ন বাজারের দশকর্মার দোকানগুলিতে সরবরাহে জোর দিয়েছেন। এবার গতবছরের দ্বিগুন সংখ্যক প্রদীপ তৈরি করেছেন। তাদের আশা এবারেও মাটির প্রদীপের চাহিদা ভালোই থাকবে।

অন্যদিকে বাঁকুড়া শহরের চকবাজার, ইন্দারাগোড়া, লালবাজার, মাচানতলা ইত্যাদি এলাকার দশকর্মান্বিত ও মাটির জিনিষ বিক্রির দোকান মালিকদের বক্তব্য, মাটির প্রদীপের চাহিদা গত কয়েক বছরে অনেকটাই বেড়েছে। বৈদ্যুতিক আলোর (টুনি) মালার দাপটে মাটির প্রদীপ বিক্রি কমে গিয়েছিল। বৈদ্যুতিক লাইট মালার দাম অত্যন্ত বেশি এবং বেশি দিন চলে না। প্রথম দিকে সকলে ভেবেছিলেন যে বৈদ্যুতিক লাইট মালা দীর্ঘদিন চলবে। তাই সে দিকে ঝুঁকেছিলেন। সেই ধারনা ভুল বলে বুঝতে পেরে ফের মাটির প্রদীপে ফিরে আসছেন।

মাটির প্রদীপের বিকল্প হিসাবে মোমবাতিকে ভেবেছিলেন অনেকে। কিন্তু এই বাতি অত্যন্ত ক্ষণজীবি। তাছাড়া এতে মোম নষ্ট হয় অনেকটাই। এই মোম অপচয় রুখতে ও তেলের বিকল্প হিসাবে অনেকে মাটির প্রদীপে মোমবাতি জ্বালান। বাজারে মোম সহ মাটির প্রদীপ কিনতে পাওয়া যায়। মাটির প্রদীপ দীর্ঘক্ষণ জ্বলে এবং দাম সামান্য। তবে প্রবীণদের মতে মাটির প্রদীপের বিকল্প কিছুই হতে পারে না। প্রাচীন কাল থেকে শুভ অনুষ্ঠানে মাটির প্রদীপ ব্যবহারের রীতি রয়েছে। বিভিন্ন লোকাচার, লোক কাহিনীতে মাটির প্রদীপ ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায়। তাই মাটির প্রদীপের প্রতি একটা দুর্বলতা রয়েছে। তাই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মাটির প্রদীপ। মাটির প্রদীপ ঘুরে দাঁড়ানোয় কুম্ভকার ও পরিবেশবাদীরা খুশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *