আমাদের ভারত, ১৪ ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালিতে যাওয়ার পথে টাকিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, গাড়ির বনেট থেকে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারালেন সুকান্ত মজুমদার। প্রায় এক ঘন্টা ধরে তিনি অজ্ঞান ছিলেন। এরপর তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তার জ্ঞান ফেরে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে আনা হয় কলকাতার অ্যাপেলো হাসপাতালে, কিন্তু এখনও তিনি চোখ খোলেননি। তিনি মথায়, বুকে এবং পিঠে আঘাত পেয়েছেন।
সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতির নেতৃত্বে এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ঘিরে রণক্ষেত্র হয় বসিরহাট। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর বিজেপির সাত জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মুক্তির দাবিতে সারা রাত ধর্ণা দেন সুকান্ত মজুমদার। রাত সাড়ে ১২টায় তাঁকে আটক করে পুলিশ। তারপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর টাকির একটি হোটেলে ছিলেন সুকান্ত মজুমদার। বুধবার সকালে তাঁর যাওয়ার কথা ছিল সন্দেশখালি। তার মধ্যে সন্দেশখালিতে নতুন করে ১৪৪ ধারা জারি হয়। এদিকে হোটেলে উপস্থিত বিজেপি কর্মীরা জানান, সরস্বতী প্রতিমা সঙ্গে করে নিয়েই সন্দেশখালির দিকে রওনা দেবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। পুলিশ যদি মাঝপথে তাঁকে আটকে দেয় যেখানে আটকানো হবে সেখানেই সরস্বতী পুজো শুরু করবেন তারা। কিন্তু এরপরে পরিকল্পনা বদলে ফেলেন তারা। বুধবার টাকির হোটেলের পিছনের দরজা দিয়ে একটি সরস্বতী প্রতিমা কোলে নিয়ে বেরিয়ে যান সুকান্ত মজুমদার। ইছামতীর ঘাটে প্রতিমা বসিয়ে পুজো শুরু করা হয়।
পুজো শেষে পুলিশ তাকে আবার হোটেলে ফিরে যাওয়ার কথা বলে। কিন্তু তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি শুরু হয়। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, তিনি সন্দেশখালি যাবেন। পুলিশ জানায়, অনুমতি দেওয়া যাবে না। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হলে তাঁকে মহিলা পুলিশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। এরপর সুকান্ত মজুমদার পুলিশের গাড়ির বনেটে উঠে পড়েন। পরে পুলিশের নির্দেশে পুলিশের গাড়ির চালক গাড়ি চালালে সুকান্তবাবু গাড়ির বনেট থেকে নীচে পড়ে যান। তারপর তিনি আবার উঠে দাঁড়ালে মহিলা পুলিশ দিয়ে তাঁকে আবার ঘিরে দেওয়া হয়। এরপর ধস্তাধস্তিতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান। বিজেপির অভিযোগ, অসুস্থ সুকান্ত মজুমদারকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে টালবাহানা করে পুলিশ।
প্রায় একঘণ্টা পর বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে বসিরহাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার জ্ঞান ফেরে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে আনা হয় কলকাতার অ্যাপেলো হাসপাতালে। অ্যাপেলো সূত্রে জানাগেছে, তাঁর মাথায় বুকে এবং পিঠে চোট লেগেছে। এখনও তিনি চোখ খোলেননি। এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল বিভিন্ন জেলায় পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও এর ডাক দিয়েছে বিজেপি।