আমাদের ভারত, হাওড়া, ৫ সেপ্টেম্বর: উলুবেড়িয়ার খড়িয়া ময়নাপুরের বাসিন্দা কুশল সামন্ত থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। প্রতিমাসে তার ব্লাড ট্রান্সফিউশন করতে হয়। যদিও এবারে করোনা আতঙ্কে রক্তদান শিবির সেভাবে অনুষ্ঠিত না হওয়ায় ছোট্ট শিশুর রক্ত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছিল। যদিও সেই অনিশ্চয়তা কাটাতে এগিয়ে এল জগৎবল্লভপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার দিলীপ রায়। শনিবার সকালে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে এসে দিলীপ কুশলের জন্য রক্তদান করে গেলেন। প্রাণ ফিরে পেল ছোট্ট শিশু।
জানাগেছে, কুশলের বাবা মলয় সামন্ত দিন মজুরের কাজ করে। যদিও লকডাউনের জেরে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে সমস্যার মুখে পড়েছিল তিনি। এরই মাঝে নতুন করে তার দুশ্চিন্তা বাড়ি এসেছিল কুশলের রক্ত পাওয়া নিয়ে। সূত্রের খবর, গত তিনদিন ধরে ছেলের রক্তের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল মা-বাবা। কিন্তু রক্তের জোগাড় না হওয়ায় তার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নেমে দাঁড়িয়ে ছিল ৪.২। পরিবার সূত্রে খবর, করোনা আতঙ্কে একদিকে যেমন রক্তদান শিবির না হওয়ায় রক্তের অভাব দেখা দিয়েছে অন্যদিকে সেইরকম কুশলের ব্লাড গ্রুপ ‘এ’ নেগেটিভ হওয়ায় সমস্যা আরো বাড়িয়েছে। এদিকে ছেলের জন্য রক্ত যোগাড় করতে না পেরে শেষে শুক্রবার রাতে মা-বাবা দ্বারস্থ হয় উলুবেড়িয়া ব্লাড গ্রুপের সদস্যদের কাছে। গ্রুপের সদস্যরা সমস্যা শোনার পরেই ‘এ’ নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত দাতার খোঁজে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিষয়টি।

এর পরেই পোস্টটি নজরে আসে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের। রাতেই বিভিন্ন থানায় বার্তা পাঠানো হয়। জানা যায় জগৎবল্লভপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার দিলীপ রায়ের রক্তের গ্রুপ ‘এ’ নেগেটিভ। সমস্যার সমাধানের পথ মেলে। জানানো হয় ব্লাড ডোনার গ্রুপের সদস্যদের। শনিবার সকালে দিলীপ হাজির হয়ে যায় হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের সদর কার্যালয়ে। পরে উলুবেরিয়া ব্লাড ডোনার্স গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে পৌঁছে যায় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কে এবং সেখানেই ছোট্ট শিশুর জন্য সে রক্ত দেয়।
করোনা আবহাওয়ার মধ্যে একটি ছোট্ট শিশুর জন্য রক্ত দিতে পেরে নিজেকে ধন্য বলে মনে করছেন জগৎবল্লভপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার দিলীপ রায়। অন্যদিকে নিজের ছেলের সমস্যা মুক্তিতে খুশি বাবা-মা।

