আমাদের ভারত, হুগলী, ১ সেপ্টেম্বর: না আছে মুখে মাস্ক,না মানতে হয় সামাজিক দূরত্ব। ও চিন্টু, তাই ওর সব মাফ। ও তো পাগল, তাই ওর এসব লাগেনা। চিন্টুকে সবাই চেনে। ভালো নামটা এখনও মনে আছে, বরুন ভট্টাচার্য। হুগলীর শ্রীরামপুর শহরে চিন্টুর অবাধ আনাগোনা। সকাল থেকে রাত–এ দোকান ও দোকান ঘুরে কখনও চা, বিস্কুট, কেউ আবার দেন দুমুঠো ভাত। তাও ফেলে ছড়িয়ে খাওয়া। আবার না খেলেও হয়। কিন্তু গত ছমাসে যখন সারা বিশ্ব মাস্ক, স্যনিটাইজার নিয়ে ব্যস্ত, দূরত্ব বজায় রাখতে যখন সবাই গৃহবন্দী তখন চিন্টু কিন্তু তার পুরোনো মেজাজেই।
শ্রীরামপুর শহরের যারা চিন্টুকে চেনেন বা গত তিরিশ বত্রিশ বছর ধরে দেখছেন, তাদের মতে চিন্টুদের বাড়ি ছিল এই শহরেরই সম্ভ্রান্ত এলাকা দে স্ট্রীট এ। ভট্টাচার্য পরিবারের এই চিন্টু একসময় তার মা, বড় দাদা ও দিদির সাথে এই শহরেরই রাস্তায় নেমে আসে কোনো এক অঙ্গাত কারনে। মানসিক ভারসাম্য হীন হয়ে রাস্তাতেই কেটে গেছে এতগুলো বছর। মা, দাদা মারা যাওয়ার পর চিন্টুর একমাত্র সম্বল তাঁর দিদি। মাঝে মাঝে তাঁকে দেখা যায় চিন্টুকে রাস্তার কলে স্নান করিয়ে বা চুল দাঁড়ি কেটে দিতে। কিছু পয়সা জোগার করে হোটেল থেকে খাবারও কিনে দেন তিনি। বাকি দিনগুলো চিন্টুর গন্তব্য ওই রাস্তাই। প্রবল শীত হোক বা ভরা বর্ষা বা গ্রীষ্মের প্রখর রোদ, কারোর ফেলে দেওয়া ছেঁড়া কাপর কোমড়ে জড়িয়ে চিন্টু কিন্তু রাস্তাতেই। না, রাস্তায় ফেলে দেওয়া খাবার হোক বা নোংরা জিনিস, সব ছুঁয়েও চিন্টুকে কাবু করতে পারেনি করোনা, জ্বর,সর্দি কাশি বা অন্য কোনও কঠিন ব্যাধি।

