সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৫ সেপ্টেম্বর: ঝোপ থেকে ফের জীবিত ও সুস্থ নবজাতক উদ্ধারকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে বাঁকুড়া জেলাজুড়ে। এনিয়ে গত একমাসে দুটি শিশু উদ্ধারের ঘটনা ঘটল। গত ২৫ অগাস্ট জেলার ছাতনা ব্লক থেকে উদ্ধার হয় বস্তাবন্দী অবস্থায় এক নবজাতক। এবার নবজাতক শিশু উদ্ধার হল হীড়বাঁধ থেকে।
গতকাল বিকেলে হিড়বাঁধ থানার তিলাবনী গ্রামে রাস্তার ধারে একটি ঝোপের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় এক সদ্যোজাত কন্যাশিশু। ঝোপে কান্নার আওয়াজে গ্রামবাসীদের নজরে আসে শিশুটি। তারা দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক পরিচর্যা করে পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় যে, নবজাতকের বয়স ৭-১০ দিন। পুলিশ শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সে আশ্চর্যজনকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান। শিশুটিকে চাইল্ড হেল্পলাইনের তত্ত্বাবধানে দেওয়া হয়েছে। জেলা শিশু কল্যাণ সমিতিকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। শিশুটিকে কে বা কারা ঝোপে ফেলে গিয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকের আঁচুড়ি গ্রামে বস্তা বন্দি অবস্থায় এক সদ্যজাত শিশু কন্যা উদ্ধার হয়। বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ এসে সদ্যজাত শিশুটিকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়।সদ্যোজাত শিশু কন্যাদের এভাবে জীবিত অবস্থায় ঝোপে বা রাস্তায় ফেলে দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জেলার বিভিন্ন মহল। এই ঘটনার ঠিক একমাস আগে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বাঁকুড়া সদর থানার বগা গ্রামে মা- বাবার সঙ্গে শুয়ে থাকা দেড় বছরের এক শিশুকন্যা রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়। তিনদিন পর পুলিশ শিশুটির বাবাও মাকে গ্রেপ্তার করে তাকে খুনের অভিযোগে। এই ঘটনার পিছনে শিশুটি কন্যা, বিশেষ ভাবে সক্ষম ও অবৈধ সম্পর্কের ফল ইত্যাদি নানা যুক্তি খাড়া করেন ধৃত বাবা ও মা।
বাঁকুড়া জেলায় শিশু কন্যা হত্যা ও রাতের অন্ধকারে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটে চলেছে। সম্প্রতি বাঁকুড়া শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা সতীঘাট এলাকার এক নিকাশি নালা থেকে একটি ৭-৮ মাসের মানব ভ্রূণ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনার আগে সোনামুখী ও বিষ্ণুপুরেও ভ্রূণ উদ্ধার
হয়েছিল। বিষ্ণুপুরে নর্দমার মধ্যে প্লাস্টিক মোড়ানো অবস্থায় একটি ভ্রূণ উদ্ধার হয়েছিল। সোনামুখী পুরসভার সামনে নর্দমা থেকে জোড়া ভ্রূণ উদ্ধার হয়েছিল। এই ঘটনায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অভিযোগের তীর অবৈধ গর্ভপাত ও অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে, কিন্তু এসব বেদনাদায়ক ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলেছে।

