Shashi Tharoor, Modi, যুদ্ধ বিরতির সিদ্ধান্ত, মোদীর বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ বলে মনে করেন চিদাম্বরম ও শশী থারুর

আমাদের ভারত, ১১ মে: ভারত-পাক যুদ্ধ বিরতি নিয়ে কড়া ভাষায় মোদী সরকারের সমালোচনা করছেন অনেক বিরোধীরাই। ভূ- কৌশলবিদ ব্রহ্ম চল্লানি বলেছেন, ভারত যখন কৌশলগতভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল তখন উল্টো পথে হাঁটলো। যুদ্ধবিরতির পথে হেঁটে জয়ের মুখ থেকে হাড় ছিনিয়ে আনলো ভারত। কিন্তু চেল্লানি এ কথা বললেও নরেন্দ্র মোদীর বুদ্ধিমত্তা ও দূরদর্শিতার তারিফ করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। একই সঙ্গে মোদীর এই পদক্ষেপকে এই সময়ে সঠিক বলে মনে করেছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী খারুর।

মোদী জমানায় তিনি সাড়ে তিন মাস জেল হেফাজতে ছিলেন। সেই চিদাম্বরমের কথায়, প্রধানমন্ত্রী একটি সম্ভাব্য বৃহত্তর যুদ্ধের ঝুঁকি আন্দাজ করতে পেরেছেন এবং সীমিত লক্ষ্য নির্ধারণ করে সংযত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। এটি ছিল বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ।

তিনি আরো বলেছেন, পাকিস্তানের চারটি এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের পাঁচটি জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ছিল সুনির্দিষ্ট ও সুপরিকল্পিত। কোনো জনবসতি বা পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটি আক্রমণ না করে কেবল জঙ্গি পরিকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। তাঁর ভাষায়, একটি আক্রান্ত দেশের বৈধ প্রতিক্রিয়া হিসেবেই এই অভিযানের ব্যাখ্যা দেওয়া যায়।

পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে কিছু জঙ্গি নেতা মারা গেলেও জঙ্গি সংগঠনের মূল নেতৃত্ব এখনো সক্রিয় বলেই মন্তব্য করেছেন চিদাম্বরম। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, পাকিস্তানের এখনো এমন বহু যুবক রয়েছে যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারতের সন্ত্রাস চালাতে প্রস্তুত। যতদিন পাকিস্তানের সেনা, নেতৃত্ব এবং আইএসআই প্রভাবশালী থাকবে ততদিন ভারতে নিরাপত্তায় ঝুঁকি থেকে যাবে।

চিদাম্বরম শিকার করেছেন, কোন সশস্ত্র সংঘাতে উভয় পক্ষের প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয় অনিবার্য। ভারতীয় নাগরিকদের মৃত্যু প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও কিছু ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায় না।

প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধ বিরোধী সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরও। তিনি বলেছেন, ভারতের উদ্দেশ্য ছিল সন্ত্রাসবাদীদের শিক্ষা দেওয়া এবং সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। এখন সরকারের উচিত, পেহেলগাঁও আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা। তাঁর মতে, ১৯৭১ সালের সঙ্গে ২০২৫- এর পরিপ্রেক্ষিত সম্পূর্ণ আলাদা। ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তুলনার যে চেষ্টা চলছে সেটা ঠিক নয়। সংবাদ সংস্থাকে তিনি জানিয়েছেন, আমরা এমন একটা পর্যায়ে গিয়ে পড়েছি যেখানে যুদ্ধ পরিস্থিতি বাড়লে সেটা হাতের বাইরে চলে যাবে। সকলের কাছে শান্তিটা খুব দরকার। ১৯৭১ সাল ও ২০২৫- এর পরিস্থিতির মধ্যে মিল নেই। উভয়ের মধ্যে ফারাক অনেক। তাঁর কথায়, আমি বিশ্বাস করি ভারতের মানুষ শান্তি চান। আমাদের অনেক ভোগান্তি হয়েছে। পুঞ্চের মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন কতজন মারা গিয়েছেন? তার মানে আমি এটা বলছি না যে আমাদের যুদ্ধ বন্ধ করা দরকার। যখন সেটা ধারাবাহিকভাবে করার দরকার তখন সেটা করা উচিত, কিন্তু এই যুদ্ধটা ধারাবাহিকভাবে করার দরকার নেই। জঙ্গিদের একটা শিক্ষা দেওয়ার দরকার ছিল সেই শিক্ষাটা দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *