রাজেন রায়, কলকাতা, ২৮ সেপ্টেম্বর: আগের দিন হাজিরাতে এসেও সাড়ে ৩ ঘন্টা গাড়িতেই বসেছিলেন জঙ্গলমহলের তৃণমূল নেতা। এনআইএ তাঁকে হেফাজতে চাইলেও ধুম জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন পিয়ারলেস হাসপাতালে। সোমবার তার ফের ছিল এনআইএ আদালতে হাজিরা দেওয়ার দিন। কিন্তু তার বদলে ছত্রধর মাহাতোর করোনা রিপোর্ট এ দিন জমা পড়ল আদালতে।
জানা গিয়েছে, তাঁর আরটিপিসিআর টেস্ট হয়েছে। এনআইএ গোয়েন্দাদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন ছত্রধর মাহাতোর আইনজীবী কৌশিক সিনহা। তিনি আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সেই মর্মে তিনি ছত্রধর মাহাতোর আরটি পিসিআর রিপোর্টও জমা দেন। স্বভাবিক ভাবেই এখনই আর ছত্রধর মাহাতোকে নিজেদের হেফাজতে নিতে সক্ষম হল না এনআইএ। তবে ২ সপ্তাহ পরে আবারও তাঁকে আদালতে হাজিরা দিতে হতে পারে বলেই জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২১ জুলাইয়ের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সাংগঠনিক রদবদল করেছিলেন, তাতে ছত্রধরকে তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য করা হয়েছিল। তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে ১০ বছর পুরনো ২টি মামলার তদন্ত ফের শুরু করে এনআইএ। তৃণমূলে তার রাজনৈতিক ক্ষমতা খর্ব করার জন্যই এই অপচেষ্টা বলে দাবি করেছিলেন খোদ ছত্রধরই।
একসময় বাম প্রশাসনকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারলেও ২০১৯ লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলে নাস্তানাবুদ হয়েছে তৃণমূল। সেই মাটি পুনরুদ্ধারে ছত্রধরকেই একুশের বিধানসভায় ব্যবহার করতে চায় শাসকদল। কাঁটাপাহাড়ি বিস্ফোরণ মামলায় ১০ বছর জেলে ছিলেন তিনি। আবার
১১ বছর আগে তৎকালীন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ও অধুনা ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় গ্রামে খুন হয়েছিলেন দুইজন সিপিএম কর্মী। তখনও রাজ্যের মসনদে বামেরা। ছত্রধর মাহাতো সেই সময় ছিলেন জনসাধারনের কমিটির নেতা। এনআইএ এখন হঠাৎ করেই এই পুরানো মামলা তুলে এনে তাতে ইউএপিএ ধারা যুক্ত করে ছত্রধর মাহাতোকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে। যদিও এদিনের করোনা রিপোর্ট এনআইএ-র সেই চেষ্টাকে অনেকটাই পিছিয়ে দিল।