পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩১ জুলাই: মেলা শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো মিলন। বিভিন্ন আর্থিক, সামাজিক এবং বাণিজ্যিক কারণে মানুষের একত্রিত হওয়ার ফলে সৃষ্টি হওয়া মিলন উৎসব হলো মেলা। তেমনই এক মেলার দেখা মিলল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা তিন নম্বর ব্লকের চন্দ্রকোনা রোডে। একমাস ধরে চলা এই মিলন মেলাটির নাম চন্দ্রকোনা রোড শ্রাবণী মেলা। আয়োজক বিলা গ্রামবাসী। এই মেলা কি ঐতিহ্য হারিয়েছে? কমেছে জৌলুস? প্রশ্নটা উঠে গেল।
এই মেলায় একদিকে যেমন নাগরদোলা রয়েছে, তেমনি রয়েছে খাবারের দোকান। স্টেশনারি থেকে কসমেটিক্স, বই, ছবি থেকে ছোট বাচ্চাদের খেলনা, নিত্য সামগ্রী, গৃহস্থলির সামগ্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিনোদনমূলক সাজ সরঞ্জাম নিয়ে জমজমাট মেলার পরিবেশ।
মেলায় যেমন পারিপার্শ্বিক গ্রামগুলির সামাজিক কৃষ্টি ও সাংস্কৃতিক মিলন ঘটে তেমনি ঘটে মানসিক ও আর্থিক মেলবন্ধন। বৃদ্ধি পায় সামাজিকতা। বেড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। মেলা খুঁজে দেয় পুরানো দিনের বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা। কোথাও পোড়ামাটির সামগ্রী ফিরিয়ে নিয়ে যায় আমাদের সেই পুরনো দিনে। কোথাও ঝাঁ চকচকে স্টিলের সামগ্রী মনে করিয়ে দেয় প্রয়োজনীয়তা। মেলায় ছোট ছোট বাচ্চাদের খেলনা যেমন মেলার প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে দেয়, তেমনি এই মেলায় আবাল বৃদ্ধ বণিতা খুঁজে পায় তার রামায়ণ থেকে মহাভারতের মত মহা মূল্যবান পুঁথি। এই মেলা একদিকে যেমন ছোট বাচ্চাদের আনন্দ দেয়, তেমনি বড়দের দেয় ভেলপুরি থেকে পাপড়ি চাটের মত খাদ্য সামগ্রী।
কোথাও দোলনা, কোথাও নাগরদোলা বাচ্চাদের উপহার দেয় অনাবিল আনন্দ। এই অত্যাধুনিক বিজ্ঞানের যুগে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এই মেলা। এই মিলন উৎসবের সাথে কোথাও একটা বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির যুদ্ধ শুরু হয়েছে। মানুষ মুঠোফোনে আবদ্ধ হওয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে এই মেলার পরিবেশ। তাই আগামী কয়েক বছর পর এই মেলার কি আদৌ দেখা মিলবে? তা নিয়েই রইল প্রশ্ন।