সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১১ নভেম্বর: “এ যেন মাছ না পেয়ে, ছিপে কামড়”
ইতিমধ্যে বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠকে তাঁর পদ থেকে পদত্যাগের করতে জানিয়েছে দল। সেই রাগে, এবার ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণের চিঠি পাঠালেন চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ।
সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বার্তার মধ্যেই জেলায় জেলায় পুরসভায় রদবদল শুরু হয়েছে। সেই ধারায় নতুন করে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের আগুন জ্বলল উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ পৌরসভায়। এবার পুরসভার উপপুরপ্রধান জ্যোৎস্না আঢ্যকে সরানোর চিঠি পাঠালেন চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ। আর এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
সূত্রের খবর, গত ৬ নভেম্বর দলীয় নির্দেশে বনগাঁ পুরসভার প্রধান গোপাল শেঠকে পদ ছাড়তে বলা হয়েছিল। দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ ছিল– ৭ দিনের মধ্যে ইস্তফা দিতে হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও গোপাল শেঠ পদত্যাগ করেননি। এরপরেই তাঁকে ‘দলীয় নির্দেশ অমান্য’-র অভিযোগে নতুন করে নোটিশ পাঠানো হয়। যদিও তারপরেও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন গোপাল শেঠ। এই রাজনৈতিক উত্তেজনার আবহেই মঙ্গলবার উপপুরপ্রধান জ্যোৎস্না আঢ্যকে অপসারণের চিঠি পাঠান পুরপ্রধান গোপাল শেঠ। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “পশ্চিমবঙ্গ পুর আইন, ১৯৯৩ এর ধারা ২১ (গ) অনুসারে, দীর্ঘদিন ধরে পুর রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে গাফিলতি এবং অসন্তোষজনক ব্যবহারের অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। সমস্ত বিষয়ের স্বচ্ছ তদন্তের স্বার্থে আপনাকে উপপুরপ্রধানের পদ থেকে অপসারণ করা হচ্ছে।”
চিঠি হাতে পেয়ে ক্ষুব্ধ জ্যোৎস্না আঢ্য জানান, “আজ হঠাৎই একটা চিঠি পেলাম, যেখানে বলা হয়েছে আমাকে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরানো হয়েছে। দলের তরফে এমন কোনও নির্দেশ আমার কাছে আসেনি। গোপাল শেঠ পাগল হয়ে গিয়েছে। কারণ দল ওকে পদত্যাগ করতে বলেছে, কিন্তু সে তা না করে আমার পিছনে লেগেছে। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।”
বনগাঁ পুরসভার অভ্যন্তরীণ এই দ্বন্দ্ব নিয়ে বিজেপির তরফে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল বলেন, “এর আগেও বলেছি, তৃণমূলের এই গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে যেন বনগাঁর নাগরিকরা তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন। ওরা যা ইচ্ছা করছে, এতে প্রশাসনের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।” যদিও এই চিঠির উপপুরপ্রধানকে অপসারণের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি গোপাল শেঠ।

