বিশেষ গুরুতর হাওড়া- কলকাতা সহ রাজ্যের সাত জেলা, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে মোদী সরকার

আমাদের ভারত, ২০ এপ্রিল: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মতে কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং জেলায় করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত বিশেষভাবে গুরুতর। সংক্রমণের নিরিখে হটস্পট জেলাগুলির পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তেমনটাই মনে করছে কেন্দ্র। তাই এই জেলা গুলির পরিস্থিতি ঠিক কতটা স্পর্শ কাতর তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আন্তঃ মন্ত্রক প্রতিনিধি দল রাজ্যে পাঠাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।

রাজ্যের অনেক জায়গাতেই লকডাউনের নির্দেশিকা সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না। সে ব্যাপারে আগেই রাজ্য সরকারকে সতর্ক করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু তারপরেও রাজ্যের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয় কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুযায়ী ৩৫(১),৩৫(২),৩৫-২এ, ৩৫-২-ই ও ৩৫-২ আই ধারা অনুযায়ী কেন্দ্রের অধিকার প্রয়োগ করে আন্তঃ মন্ত্রক প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রাজ্যের মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে আগামী তিন দিনের মধ্যে এসে কেন্দ্রের দুটি প্রতিনিধি দল ওই সাত জেলার পরিস্থিতি ঘুরে দেখবে। রবিবারেই সেই চিঠি নবান্নে চলে এসেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে বিপর্যয়ের মোকাবিলা আইন মোতাবেক লকডাউন শর্ত ঠিকমতো মানা হচ্ছে কিনা তা প্রতিনিধিদল খতিয়ে দেখবে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ ঠিক আছে কিনা, সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে কিনা, রাস্তায় কত মানুষ যাতায়াত করছে এবং স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সহ করোনা মোকাবিলায় হাসপাতালের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন তারা।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল হটস্পট জেলাগুলিতে কতগুলো নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখবে এই প্রতিনিধি দল। ব বাংলার প্রতিটি বিরোধী দলই বার বার পর্যাপ্ত সংখ্যক টেস্ট হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন। প্রকৃত আক্রান্তে সংখ্যা ও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে রাজ্য সরকার সঠিক তথ্য দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। তাদের দাবি এতে সাধারণ মানুষের আরোও বিপদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। তাদের অভিযোগ যেহেতু রাজ্য সরকার আক্রান্তের সংখ্যা কম করে দেখাচ্ছে তাই বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন এলাকার মানুষের ধারণা হচ্ছে যে বাংলায় সংক্রমণ তেমন ছড়ায়নি। সব ভালো আছে। তাই অনেকেই লকডাউন ভেঙে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছি এই প্রতিনিধি দল খতিয়ে দেখবে যে ঐ সাত জেলায় পর্যাপ্ত টেস্ট কিট আছে কিনা, ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীরা ঠিকমতো পিপিই ইত্যাদি পাচ্ছেন কিনা। একই সঙ্গে খতিয়ে দেখবেন ত্রাণশিবিরে থাকা শ্রমিকদের অবস্থা।

এই দুটি প্রতিনিধি দলের প্রথম দলটি কলকাতা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর ও উত্তর ২৪ পরগনায় যাবে। পাঁচজনের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকবেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব অপূর্ব চন্দ্র। সেইসঙ্গে থাকবেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার যুগ্ম সচিব রমেশচন্দ্র গণ্ট।স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডেপুটি ডিরেক্টর জিলে সিংহ ভিকাল। পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট অধ্যাপক আর পতি। উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকের ডিরেক্টর সীতারাম মিনা।

দ্বিতীয় দলটি যাবে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে। তার নেতৃত্ব দেবেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব বিনীত জোশী। সেই সঙ্গে থাকবেন পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট অধ্যাপক শিবানী দত্ত। বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার উপদেষ্টা অজয় গাঙয়ার। উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের ডিরেক্টর ধর্মেশ মাকওয়ানা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডেপুটি সেক্রেটারি এমবি মানি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *