পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৯ ফেব্রুয়ারি: লোকসভা নির্বাচনের ঝাড়গ্রামে সভা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ ঝড়গ্রাম স্টেডিয়ামে জনসভায় বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। সাধারণ মানুষের আধার কার্ড কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আমরা সেই সব মানুষদের পাল্টা কার্ড দেব। তাদের অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না। তাদের নাগরিকত্ব না থাকলে তারা লক্ষ্মীর ভান্ডার পাচ্ছে কি করে? কাউকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে না। সবাই থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন ঝাড়গ্রাম ছোট জেলা। এখানকার সব মানুষ সরকারি পরিষেবা পাচ্ছেন। যারা ১০০ দিনের কাজের মজুরি পায়নি তাদের আমরা টাকা মিটিয়ে দেব।
এ পর্যন্ত ৪৭ লক্ষ বাড়ি আমরা করে দিয়েছি।
গরিব মানুষদের ২৮৬টি উদ্বাস্তু কোলোনিকে আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি। আদিবাসীদের জন্য স্কুলগুলিতে ৯২ জন প্যারা টিচার নিয়োগ করা হচ্ছে। ১১ লক্ষ মানুষকে বার্ধক্য ভাতা এবং এক লক্ষ চার হাজার জনকে বিধবা ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এবছর আরো ১৬ লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডার পাবে। সকলের জন্য ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে হাজার টাকা করা হয়েছে। আদিবাসীদের জন্য হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে বারোশো টাকা করা হয়েছে। এই টাকা যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন পাবে।
ছেলে- মেয়েদের আগামী বছর থেকে ক্লাস ইলেভেন থেকেই স্মার্ট ফোন দেওয়া হবে। কৃষি ও শিল্পের জন্য জেলায় জেলায় তৈরি হবে বিগবাজার। যেখানে কৃষক এবং শিল্পীরা তাদের তৈরি করা জিনিসপত্র বিক্রি করতে পারবে। মৎস্যজীবী সহ বিভিন্ন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা মারা গেলে তাদের পরিবার ২ লক্ষ টাকা করে পাবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জঙ্গলমহল সহ এ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় হাতির উপদ্রব রয়েছে। দিন দিন হাতির সংখ্যা বাড়ছে। ঝাড়খন্ড এবং নেপাল থেকে এ রাজ্যে হাতির ঢুকে পড়ছে। নেপালে হাতিদের মেরে ফেলা হয়, কিন্তু আমরা তা করি না। হাতিতে মেরে ফেলেছে এরকম ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের এ পর্যন্ত ৭৫০ জনকে বনদপ্তরে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এরা বারো হাজার টাকা করে মাইনে পাচ্ছেন।
জঙ্গলমহলের বিগত দিনের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এক সময় রক্তাক্ত ছিল জঙ্গলমহল। বেলপাহাড়ি, লালগড় এলাকায় আমি ঘুরতাম। কি ভয়াবহ দিন গেছে তা দেখেছি। কিন্তু এখন আর রক্ত নেই। এখন উন্নয়নের পালা।
আজ অনুষ্ঠান শুরুর পর ছেলেমেয়েদের সাইকেল, সাধারণ মানুষদের পাট্টা, লোধাদের বাড়ির চেক, জাতিগত সমস্যা পত্র তুলে দেওয়া হয়। আদিবাসী সমাজের কয়েকজন লেখক ও শিল্পীকে সম্মান জানানো হয়। খেরওয়াল সরেনকে দেওয়া হয় বঙ্গবিভূষণ। অন্যান্য আদিবাসীদের প্রতিনিধিদের মধ্যে বিতরণ করা হয় ধমসা, মাদল।

