আমাদের ভারত, ১৫ জুন: পুলিশ নয়। পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেই আস্থা কলকাতা হাইকোর্টের। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সুপারিশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু আদালত রাজ্যের আপত্তি খারিজ করে জানিয়ে দিল, ভোট হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে। এই নির্দেশের ফলে জোর ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
৪৮ ঘণ্টা আগে দেওয়া কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও কমিশন কোনও পদক্ষেপ না করায় বিরক্ত প্রধান বিচারপতি। তারপরেও মনোনয়ন নিয়ে রাজ্যে একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। মনোনয়ন পর্বে হিংসার বলি তিন। মনোনয়ন পর্ব শুরুর দিনেই ডোমকলে প্রাণ হারান এক কংগ্রেস কর্মী। সেদিনের পর এদিন ছিল পঞ্চায়েতের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন।
এদিনও চোপড়া ও ভাঙড়ে চলে মাত্রা ছাড়া হিংসা। চলে গুলি। মনোনয়ন জমা দিতে এসে চোপড়ায় গুলিবিদ্ধ হন তিন জন। মৃত্যু হয় একজনের। অন্যদিকে ভাঙড়েও চলে গুলি। আহত হন বেশ কয়েকজন। মৃত্যু হয় একজনের।
বিরোধীরা এ বিষয়ে কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারপরই পঞ্চায়েতকে কেন্দ্র করে যে হিংসাত্মক ও অশান্তির বাতাবরণ রাজ্যে তৈরি হয়েছে তাকে রুখতে গোটা রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম।
কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশকে পুনর্বিবেচনার আরজিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ওই মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, “গত পরশু আইএসএফ ১৫ হাজার সমর্থক নিয়ে মনোনয়ন পেশ করতে গিয়েছেন। মনোনয়ন কেন্দ্র ভাঙ্গচুর করেছে। বিজেপির দুই নেতা দুই জেলায় অশান্তি তৈরি করেছে। গোটা রাজ্যজুড়ে বিজেপি সহ বিরোধীরা অশান্তি তৈরি করছে।” বিজেপির আইনজীবীও তাঁর বক্তব্য পেশ করেন এজলাসে।
মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজ্যে রক্তপাত। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রশ্ন করেন, “রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেব?”