বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে বাঁকুড়ায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১০ জানুয়ারি: জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু করার আগে বিদ্যালয়গুলির শিক্ষার মান ও পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রীয় দলটি মঙ্গলবার বাঁকুড়া জেলার খাতড়া মহকুমার অম্বিকানগর উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। কেন্দ্রীয় শিক্ষা দপ্তরের ২ জন আধিকারিকের সাথে বাঁকুড়া জেলার শিক্ষা দপ্তরের ২ জন আধিকারিকও ছিলেন। এই বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মোট ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ১৫৩৮ জন। তার মধ্যে ছাত্রের ৮১৯ জন ও ছাত্রী ৭১৯ জন। বিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রকল্প, বিজ্ঞান ল‍্যবরেটরি সহ বিভিন্ন বিভাগ খতিয়ে দেখে ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন আধিকারিকরা। বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।

“ভোকেশনালাইজেশন অফ স্কুল এডুকেশন, মিড ডে মিল, কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন
প্রকল্পগুলির বিষয়ে খোঁজ নেন তারা। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ২০১৮ সালে সমগ্র শিক্ষা অভিযানের অন্তর্গত এই বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের “ভোকেশনালাইজেশন অফ স্কুল এডুকেশনের” অধীনে অটোমোটিভ এবং ইনফরমেশন টেকনোলজি বিষয়ের উপর হাতে কলমে শিক্ষাদান শুরু হয়। কিন্তু এই প্রকল্পে ৫ বছরের বেশি সময় ধরে ছাত্র ছাত্রীদের পাঠ্যপুস্তক মিলছে না, ল্যাবের সরঞ্জামও মিলছে না, এমনকি এই বিষয়ে যাঁরা শিক্ষকতা করছেন তাঁরাও সময়মতো বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ জানানো হয়। এই প্রকল্পে ছাত্র ছাত্রীদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ অর্থ বিভিন্ন প্রাইভেট এজেন্সির মাধ্যমে অপব্যবহার হচ্ছে, এবিষয়ে রাজ্য সরকার এই দুর্নীতিকে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগীতা করছেন বলে শিক্ষকরা কেন্দ্রীয়
পরিদর্শকদের কাছে অভিযোগ করেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুজিত মন্ডল বলেন,
“আমাদের বিদ্যালয়ে যে বিভিন্ন সমস্যা আছে, তা আমরা আধিকারিকদের জানিয়েছি, আশা রাখছি শীঘ্রই সমাধান হবে, তবে আধিকারিকরা বেশ কিছু প্রকল্পে আমাদের পরিচালনার প্রশংসা করেছেন”।

কেন্দ্রীয় আধিকারিক ভারত রাজন বলেন, “মূলত জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ চালু করার আগে আমরা বিদ্যালয়গুলোর পরিকাঠামো পরিদর্শনের সাথে সাথে ছাত্র ছাত্রীরা সঠিক সময়ে পাঠ্যপুস্তক, পোশাক সহ ভোকেশনালাইজেশন অফ স্কুল এডুকেশন ও অন্যান্য কেন্দ্রের যে প্রকল্পগুলো চলছে এই বিদ্যালয়ে সেইগুলোর সমস্যা আজ আমরা লিপিবদ্ধ করেছি, সমাধানের জন্য আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো”।

পশ্চিমবঙ্গ ন্যাশনাল স্কিলস কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক শিক্ষক পরিবারের বাঁকুড়া জেলার আহ্বায়ক অরূপ সরকার বলেন, “২০১৮ থেকে আমি এই বিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের বৃত্তিমূলক বিষয়ে শিক্ষাদানের সাথে যুক্ত হলেও রাজ্য সরকারের উদাসীনতার জন্য ধ্বংস হতে বসেছে এই হাতে কলমে শিক্ষাব্যবস্থা, সরকার সরাসরি পরিচালনা না করে বিভিন্ন প্রাইভেট এজেন্সি দিয়ে এই বৃত্তিমূলক শিক্ষা পরিচালনা করার ফলে ছাত্র ছাত্রীরা কোনোভাবেই উপকৃত হচ্ছে না এবং সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থের অপচয় করছে এই প্রাইভেট এজেন্সিগুলি। শিক্ষকদের বেতন পর্যন্ত সময়ে দেওয়া হয়না, ২-৬ মাস পরে বেতন মেলে এবং যখন তখন ছাঁটাই করে দেওয়া হয় শিক্ষকদের, অবিলম্বে সরাসরি সরকারকে পরিচালনার মাধ্যমে শিক্ষকদের স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়গুলি লিখিত আকারে পেশ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *