আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ২৪ ডিসেম্বর: মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রতিষ্ঠা দিবস বা জন্মদিন। এই জন্মদিনকে সামনে রেখে রবিবার মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ারের উদ্যোগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের অন্তর্গত ঝর্ণাডাঙা ও কুসুমডাঙা গ্রামে অনুষ্ঠিত হল নানা সচেতনতা ও সমাজসেবা মূলক কর্মসূচি।
গত দুই বছর আগে গ্রাম দুটি একরকম দত্তক নিয়েছে মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। গত দু’বছর ধরে এই দুটি গ্রামে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কাজের পাশাপাশি ওই দুটি গ্রামের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার আরও মনোন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র। রবিবার প্রথমে অষ্টম জন্মদিনের কেক কাটা হয়। এরপর শুরু হয় দুটি গ্রামের ছোট ছোট কচিকাঁচাদের নিয়ে অঙ্কন প্রতিযোগিতা। সমস্ত স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে শিক্ষার সামগ্রী প্রদান করা হয়। এখানে একটি মস্তি কি পাঠশালা’ নামে শিশুদের খেলাচ্ছলে শিক্ষার লক্ষ্যে একটি শিক্ষা কেন্দ্রের উদ্বোধন হয়। যেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি গান, বাজনা, অঙ্কন শেখানো হবে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় ওই এলাকার কৃতি ছাত্র এবং বর্তমানে কেশপুর কলেজের অধ্যাপক গঙ্গারাম মুর্মুর ওপর।
এছাড়াও ছিল স্বাস্থ্য শিবির। গ্রামবাসীদের ব্লাড সুগার ও ব্লাড প্রেসার, হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করা হয়। বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। গ্রামের মহিলাদের স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের বিষয়ে সচেতন করেন মহিলা চিকিৎসক ও কুইজ কেন্দ্রের মহিলা সদস্যারা। দুটি গ্রামে পানীয় জলের কিছুটা সমস্যা মেটাতে, জলের পাইপ লাইনের জন্য প্রয়োজনীয় পাইপ ও অন্যান্য সামগ্রী গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দুটি গ্রামের ৭০টির বেশি পরিবারের হাতে মশারি, কম্বল, বড় টর্চলাইট সহ বেশ কিছু নতুন বস্ত্র সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও ছিল ডাইনি বিষয়ক সচেতনতা শিবির, সর্প দংশন বিষয়ক সচেতনতা শিবির। এ বিষয়ে আলোচনা করেন শিক্ষক, লেখক, লোক সংস্কৃতি গবেষক ভাস্করব্রত পতি ও জীববিদ্যার শিক্ষক “শিক্ষারত্ন” গৌতম বোস।
দুটি গ্রামের মহিলাদের নিয়ে একটি ফুটবল দল গড়ে উঠেছে এই দলটিকে মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির পক্ষ থেকে নতুন জার্সি ও ফুটবল তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয় পুরুষ ফুটবলারদেরও হাতে নতুন জার্সি ও ফুটবল তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও ছিল নানান জনকল্যাণমূলক কাজ। পাশাপাশি কুইজ কেন্দ্রের সহযোগিতায় শালবনী ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে নানা রকম সরকারি প্রকল্পের স্টল ছিল অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে। উপস্থিত ছিলেন শালবনী ব্লকের বিডিও সঞ্জয় মালাকার, শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিক অরুণাভ প্রহরাজ, কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের অফিসার দেবাশীষ বাগ, বিশিষ্ট সমাজসেবী লায়ন অমরীশ রায়, সমাজসেবী রিনা সাহা, স্থানীয় বাসিন্দা তথা কেশপুর কলেজের অধ্যাপক গঙ্গারাম মুর্মু, চিকিৎসক ডাঃ সোমঋতা মল্লিক, ডাঃ তন্ময় মন্ডল, ডাঃ জয়জিৎ দে, ডাঃ অন্বেষ প্রধান, ডাঃ বিভূতিভূষণ প্রধান, ডাঃ সন্তোষ সরকার, ছিলেন আর এন সিং মেমোরিয়াল রুরাল হেলথ্ কেয়ার ফাউন্ডেশনের পক্ষে তীর্থ সাহু, সুপ্রিয় জানা, শুভাশীষ নস্কর, কল্যাণ মান্না, সুরজিৎ দাস সহ বিশিষ্ট গুণীজন।
কুইজ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মৌসম মজুমদার, সম্পাদক সুজন বেরা, সভাপতি রিংকু চক্রবর্তী, গৌতম বসু, প্রসূন কুমার পড়িয়া, অমিতেশ চৌধুরী, দুর্গাপদ মাসান্ত, আল্পনা দেবনাথ বসু, কৃষ্ণপ্রসাদ ঘড়া, সুভাষ জানা, সোমনাথ ঘোড়াই সহ সদস্য সদস্যাবৃন্দ। আজকের অনুষ্ঠানে কুইজ কেন্দ্র পরিবারের লোকজন যেমন অংশ নেন তেমনি গ্রামবাসীরাও যোগ দেন। বিষয় আকর্ষণ ছিল সাঁওতালি সঙ্গীত ও নৃত্য।