CBI, RG Kar, ৯০ দিন পরেও চার্জশিট জমা দিতে পারেনি সিবিআই, আরজিকর মামলায় জামিন সন্দীপ অভিজিতের

আমাদের ভারত, ১৩ ডিসেম্বর: গ্রেফতারির ৯০ দিন পরেও সিবিআই চার্জশিট জমা দিতে না পারায় আরজিকর মেডিকেলে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় জামিন পেয়ে গেলেন আরজিকর মেডিকেল কলেজে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিত মন্ডল। ২০০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে শুক্রবার তাদের জামিন দেয় শিয়ালদহ আদালত। যদিও অন্য একটি মামলায় তাদের নাম জড়িয়ে থাকায় এখনো তাদের জেল থেকে মুক্তি হচ্ছে না। তবে এভাবে অভিযুক্তদের জামিন মঞ্জুর হয়ে যাওয়ায় কড়া প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে।

আজ জামিনের রায়ের পর বিচার আদায়ে ফের রাজপথে নেমে আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। দ্রুত জিবি মিটিংয়ে বসেছেন তারা। শনিবারের মধ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ জানাবেন তারা।

জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো বলেছেন, সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। ৯০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও চার্জশিট দিতে পারেনি সিবিআই। তাই জামিন পেয়ে গেল দু’জন। সিবিআই তদন্ত মানেই বিচার পেয়ে গিয়েছি তা নয়। ব্যর্থতার দায় সিবিআইকে নিতে হবে। কেন তারা ধর্ষণ ও খুনের মামলায় চাটশিট দিতে পারল না? তার জবাব দিতে হবে। সাধারণ মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করেছে সিবিআই। এবার রাজ্য ধর্ষক ও খনির মুক্তাঞ্চল হয়ে যাবে। বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিক নাগরিক সমাজ।

আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক আশফাক উল্লাহ নাইয়া বলেছেন, আজকের রায়ে আমরা সবাই হাতাশ। এত বড় একটা ঘটনা ঘটলো এত কিছুর পরেও যদি তথ্য প্রমাণ লোপাটে অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে যায়, তাহলে বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা থাকবে কী করে? কিছুক্ষণ পর নিজেই তার জবাব দিয়ে তিনি বলেছেন, সিবিআই- এর উচিত ছিল ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ করা। আশা করব এবার অন্তত তারা দ্রুত তদন্তের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে আদালতে চার্জশিট পেশ করবেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, নিজেদের যুদ্ধটা নিজেদেরই লড়তে হবে। একটা বিষয় পরিষ্কার বুঝতে পারছি বিচার পেতে হলে আন্দোলনটা চালিয়ে যেতে হবে, না হলে ন্যায় বিচার পাওয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

এই রায়ে চূড়ান্ত হতাশ নিহত নির্যাতিতার পরিবার। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন নির্যাতিতার বাবা। তিনি বলেন, “কোনো কথা বলতে পারছি না। মনটা খুব খারাপ। মেয়েটার জীবনটা এত খারাপ ছিল। এটাই ভাবছি। এত পড়াশোনা করিয়ে আজ এরকম একটা পরিস্থিতিতে আমাদের ভুগতে হচ্ছে। জানতাম সিবিআই সবচেয়ে বড় সংস্থা। কিছু একটা বের করবে। কিছু করলো না। আর কী করে আস্থা থাকবে তদন্তকারী সংস্থার উপরে। আর কোনো রাস্তা আমরা খোলা দেখতে পাচ্ছি না। আমি হতাশ।

অভয়ার মা বলেন, “আমরা খুব হতাশ, সিবিআই ৯০ দিনের মধ্যেও চার্জশিট আনতে পারল না। তাই জামিন হয়ে গেল। আমার কী বলার আছে। আমি তো সিবিআই নই, তাহলে আমি গিয়ে করে দিতাম কাজটা। সিবিআই কাজটা করেনি তাই ওদের জামিন হয়ে গেছে। এখন খুব হতাশার মধ্যে আছি। চূড়ান্ত হতাশ।

৮ আগস্ট গভীর রাতে আরজিকর- এর সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল চিকিৎসক ছাত্রীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। ধর্ষণের পর খুনের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার প্রতিবাদে পরের দিন থেকে টানা কর্ম বিরতিতে নেমেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। দীর্ঘ সময় ধরে চলা সে কর্মবিরতির পর কাজে ফিরেছিলেন তারা। আবার কি সেই পরিস্থিতি ফিরে আসতে চলেছে? বিচারের দাবিতে আবারো কি রাজপথ গর্জে উঠবে? শুক্রবার সন্দীপ রায় অভিজিত মন্ডলের জামিন মঞ্জুর হতেই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠে আসছে। আবার কি কোনো বড় আন্দোলনের‌ দেখবে রাজ্যের মানুষ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *