সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১১ মার্চ: সন্দেশখালির পর এবার ইডির উপর হামলার তদন্তে বনগাঁয় গেল সিবিআই। সোমবার সকালেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর শিমুলতলা এলাকায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা যান। রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে ধৃত শংকর আঢ্যর বাড়িতে যান তাঁরা। বাড়ি পুরো ঘিরে রাখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।
গত ৫ জানুয়ারি বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর অনুগামীরা ইডি আধিকারিকদের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়া সহ গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেদিন ইডির গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে সিবিআই সোমবার বনগাঁয় এলেন। সঙ্গে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন। তাঁরা এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করবেন, যা তদন্তে সিবিআইকে সাহায্য করবে। এর আগে গত সপ্তাহে সিবিআই আধিকারিকরা সন্দেশখালিতে গিয়েছিলেন
শেখ শাহজাহানের বাড়ি। একইদিনে এখানেও তল্লাশিতে গিয়ে আক্রান্ত হন ইডি আধিকারিকরা।
রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যর বাড়িতে গত ৫ জানুয়ারি তল্লাশি চালাতে যায় ইডি। প্রায় ১৬ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে রাত ১২ টা নাগাদ গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পথে আক্রমণের মুখে পড়ে ইডি। শংকর আঢ্যর অনুগামীরা ইডির কনভয়ে ইট ছোঁড়েন বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা তাদের দিকে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হাইকোর্টের নির্দেশে ইডির উপর এই হামলার ঘটনার তদন্তভার রয়েছে সিবিআইয়ের উপর। সোমবার বনগাঁ পৌঁছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠের বাড়ি ও অফিসে যান। তদন্ত প্রক্রিয়া এগোতে সমস্ত ডিজিটাল এভিডেন্স সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রতিটি জায়গার ছবি তোলা হচ্ছে থ্রি ডি স্ক্যানার দিয়ে। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে।
তদন্তের স্বার্থে সিবিআই আধিকারিকরা পাশে বনগাঁ পৌরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান গোপাল শেঠের বাড়িতে যান। পরবর্তীতে শঙ্কর আঢ্যর স্ত্রী বনগাঁ পৌরসভার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জোস্না আঢ্যর হাতে নোটিশ দেয় সিবিআই। সাড়ে তিন ঘণ্টা তদন্ত করবার পর বনগাঁ থেকে বেরিয়ে গেলেন ইডি আধিকারিকরা। তবে শঙ্করের বাড়ির ঢিল ছড়া দূরত্বে রয়েছে বেশ কিছু সিসিটিভি ক্যামেরা। সেটির তার খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সূত্রের খবর, সেই বিষয়ে বনগাঁ পৌরসভাকে নোটিশ দিয়ে জানতে চায় সিবিআই আধিকারিকরা।