(নিতাই দাস মুখোপাধ্যায়)
রাজেন রায়, কলকাতা, ৯ মে: ক্রমাগত নিজেদের আশপাশে করোনা আক্রান্ত আর মৃত্যুর খবর শুনতে শুনতে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন অনেকেই। কিন্তু আক্রান্তদের মনের জোর এবং চিকিৎসকদের জেদের কারণে মাঝেমধ্যেই ঘটছে মিরাকল। ঠিক যেমন ঘটেছে ৬৮ বছর বয়সী শিলচরের বাসিন্দা এক ব্যক্তি এবং ৫২ বছর বয়সী টালিগঞ্জের বাসিন্দা এক ব্যক্তির ক্ষেত্রে। দু’জনেই মনের জোরে আর চিকিৎসকদের সাহায্যে অন্য শারীরিক সমস্যাকে সঙ্গে নিয়েও করোনাকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন জীবনযুদ্ধে। বঙ্গের সাম্প্রতিক ইতিহাসে যা নজিরবিহীন বলেই দাবি চিকিৎসকদের।
প্রথমেই আসা যাক ৫২ বছর বয়সী টালিগঞ্জের বাসিন্দা নিতাইদাস মুখোপাধ্যায়ের কথায়। টানা ৩৮ দিন ছিলেন ভেন্টিলেশনে। পরিবারের লোকজন আশা ছাড়তে শুরু করলেও হাল ছাড়েননি চিকিৎসকরা। হাসপাতাল জানাচ্ছে, ২৯ মার্চ জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে ভর্তি হন নিতাইদাস বাবু। পর দিনই তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সেদিনই থেকেই টানা ভেন্টিলেশনে তিনি। এর মধ্যে তাঁর করোনা সংক্রমণ সেরে গেলেও শ্বাসকষ্টের উপসর্গের নিরাময় হয়নি। ফলে ২ মে পর্যন্ত জারি থাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট। তারপরে পরিস্থিতি ভাল হলে তাকে ভেন্টিলেশনের বাইরে আনা হয়। শুক্রবার তাঁকে ছুটি দেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় নিতাইদাস বাবুকে শুভেচ্ছা জানান হাসপাতালের চিকিৎসক ও আত্মীয়রা।

অন্যদিকে, শিলচরের বাসিন্দা ৬৮ বছরের প্রৌঢ়ের লড়াইও নজিরবহীন। আগেই গল ব্লাডার ক্যান্সার, বাইপাস সার্জারির মতো অস্ত্রোপচার তিনি পেরিয়ে এসেছেন। রক্তে শর্করার মাত্রাও অনেক বেশি। এই অবস্থায় ২০ এপ্রিল মুখে ক্যান্সারযুক্ত টিউমার নিয়ে ভর্তি হন। ভর্তির সময়ে সামান্য জ্বর থাকায় করোনা টেস্ট করা হয়। সেখানে তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর একই সঙ্গে চলতে থাকে করোনা এবং ক্যান্সারের চিকিৎসা। মে মাসের ৪ ও ৫ তারিখে পর পর দু’বার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ক্যান্সারও অনেকটাই ভাল হয়ে এসেছে তার। মুখের টিউমারটি বাদ দেওয়া হয়েছে। ৬ মে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

