পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ সেপ্টেম্বর: বহু প্রতীক্ষিত “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে”অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নীরবতার প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে অর্থ বরাদ্দ করে আগামী বর্ষার আগে শিলাবতী নদী এলাকায় খনন কার্য শুরুর দাবিতে ১২ অক্টোবর কলকাতা অভিযানের ডাক দিল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি।
এই উপলক্ষে আজ ঘাটালের অন্নপূর্ণা আর্কেডে কমিটির আহ্বানে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক ও দেবাশীষ মাইতি, অফিস সম্পাদক কানাই লাল পাখিরা প্রমুখ।
কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৩টি ব্লকের স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণে প্রায় ১৬৫০ বর্গ কিমি এলাকার আনুমানিক কুড়ি লক্ষাধিক মানুষকে বাৎসরিক বন্যার হাত থেকে রেহাই দিতে তৈরি হয়েছিল ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’। গত ১৯৮২ সালে তৎকালীন রাজ্য সেচমন্ত্রী শিলাবতীর পাড়ে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করলেও মাস্টার প্ল্যানের কোনো কাজ দীর্ঘদিন না হওয়ায় ২০০১ সালে ঘাটাল মহকুমাবাসীরা আন্দোলন গড়ে তোলেন। ফলস্বরূপ নতুন করে মাস্টার প্ল্যান পুনর্মূল্যায়ন করা হয়। ১৭৪০ কোটি টাকার ওই সংশোধিত প্রকল্পের প্রথম ধাপে কাজ হওয়ার কথা ১২১৪ কোটি ৯২ লক্ষ টাকার।
আশ্চর্যের বিষয়, ২০১৫ সালে গঙ্গা বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন ও কেন্দ্রীয় সরকারের জলসম্পদ মন্ত্রক স্কিমটিতে অনুমোদন দিলেও আজও কেন্দ্রীয় সরকার কোন অর্থ বরাদ্দ করেনি। গত ২০২২ সালে ইনভেস্টমেন্ট ক্লিয়ারেন্স কমিটির ছাড়পত্র পাওয়াকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রের শাসক দলের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ঘাটালে এসে শোরগোল ফেলে দিয়ে বললেন, টাকা মঞ্জুর হয়ে গেছে। কাজ শুরু হলো বলে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এখনো অর্থ মঞ্জুর তো দূরের কথা, কেন্দ্রীয় ইন্টার মিনিস্টিরিয়াল কমিটির ছাড়পত্রই পাওয়া যায়নি।
কমিটির অপর যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ মাইতি বলেন, দুই মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দারা আশা করেছিলেন চলতি বছরে কেন্দ্র ইন্টার মিনিস্টিরিয়াল কমিটির ছাড়পত্র দিয়ে অর্থ বরাদ্দ করবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার নীরবতা পালন করায় দুই জেলাবাসী হতাশ হয়েছেন। উভয় সরকারের এই মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ না করার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে অর্থ বরাদ্দ করে আগামী বর্ষার পূর্বে শিলাবতী এলাকায় কাজ শুরুর দাবীতে আমরা বাধ্য হয়েই আগামী ১২ অক্টোবর কলকাতা অভিযানের কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। ওই কর্মসূচির মাধ্যমে দুই জেলার বন্যা ও জলযন্ত্রনাক্লিস্ট মানুষজন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি রাজ্যপাল ও রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী এবং সেচমন্ত্রীকে গন ডেপুটেশন দেবেন। উক্ত কর্মসূচিতে সর্বস্তরের ভুক্তভোগী জনসাধারনকে যোগদান করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।