আকস্মিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত মেদিনীপুরের কেবল টিভি ও বৈদ্যুতিন সংবাদ জগতের পুরোধা সুবীর সামন্ত

জে মাহাতো, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ২৯ অক্টোবর: দুর্ঘটনায় মারা গেলেন মেদিনীপুরের কেবল টিভি ও বৈদ‍্যুতিন সংবাদ জগতের পুরোধা সুবীর সামন্ত।
নয়ের দশকের দ্বিতীয়ার্ধে মেদিনীপুর শহরের অলিগলিতে কেবল টিভি সংযোগ পৌছে দিয়েছিলেন যে ব্যক্তি, যিনি জেলার খবর বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার পথিকৃৎ ও সেই সময়ের একটি জনপ্রিয় লোকাল টিভি চ্যানেলের কর্ণধার সুবীর সামন্ত পথ দুর্ঘটনায় মারা হলেন। বৃহস্পতিবার ভোররাতে ফটোগ্রাফি সংগঠনের একটি কর্মসূচি সেরে মেদিনীপুর ফেরার পথে উলুবেড়িয়ার কাছে তার নিজের গাড়ির সাথে একটি ট্রাকের সংঘর্ষে মাত্র ৫৫ বছর বয়সে দুর্ঘটনা স্থলেই প্রাণ হারান।

অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় মেদিনীপুর কলেজ, কেডি কলেজ কিংবা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের লাইভ সম্প্রসারণ দিয়ে যার কেবল চ্যানেলে রাজনৈতিক সংবাদ প্রচার শুরু, সেই সুবীর সামন্ত দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে অতি প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের আর্জেন্ট পাসপোর্ট ফটো সরবরাহকারী, মেদিনীপুর কলেজের পাশে অবস্থিত একটি স্টুডিওর কর্ণধার সুবীর সামন্ত অবিভক্ত মেদিনীপুরের বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে এনেছিলেন এক বিপ্লব। তাঁর কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তিনি প্রায় ২৬
বছর গ্রাহকদের পরিষেবা দিয়ে এসেছেন। তার তৈরী লোকাল টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে রাজনীতি, খেলাধুলা, কুইজ, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শারোদৎসব এবং মহরমের পুরস্কার বিতরণী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন নামিদামি শিল্পীদের সমন্বয়ে শহরে সংস্কৃতিক জলসা ও বড় বড় জায়ান্ট স্ক্রিনে তার সম্প্রচারের জন্য হোক, অথবা ‘ড্রোন‘ উড়িয়ে মিছিল-মিটিংয়ের ছবি তোলা, সবক্ষেত্রে নতুনত্বের জন্যই বিখ্যাত ছিলেন সুবীর সামন্ত। বর্তমানে মেদিনীপুরে বহু প্রখ্যাত চিত্র সাংবাদিক ও সাংবাদিক তার হাতেই তৈরি।

সদা হাস্যময়, পরোপকারী এহেন ব্যক্তির অকালমৃত্যুতে মেদিনীপুরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। উলুবেড়িয়া হাসপাতালে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যায় নাগাদ মেদিনীপুর শহরে পৌঁছায়। শেষ বিদায় জানান, মেদিনীপুরের কেবল টিভি অপারেটর সংঘটন সহ সাংবাদিক, ফটোগ্রাফার, থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ও তাঁর গুণমুগ্ধরা। তিনি রেখে গেলেন স্ত্রী ও এক পুত্রকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *