সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৮ ডিসেম্বর: ১১ বছরের এক বালককে ধর্ষণের অভিযোগে মধ্য পঞ্চাশের এক ব্যবসায়ীকে দোষী ঘোষণা করল কলকাতার নগর দায়রা আদালত। ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে ওই ব্যবসায়ী ইমাম আলীর।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। পার্ক স্ট্রিট থানার ইলিয়ট রোডের নিজের বাড়ির তিনতলায় ১১ বছরের প্রতিবেশী বালককে লজেন্সের লোভ দেখিয়ে নিয়ে যায় ইমাম আলী। এরপর ওই বালককে ধর্ষণ করে ইমাম। ঘটনার পর ওই বালকটি অসুস্থ হয়ে পড়লে গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
এরপর পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই বালকের পরিবার। পার্ক স্ট্রিট থানার তদন্তকারী আধিকারিক তন্ময় দাস ইমামকে গ্রেফতার করার ৪৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬ এবং পক্সো আইনের ৪,৮,১২ ধারায় ইমামের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে আদালত।
সরকারি আইনজীবী সৈকত পান্ডে বুধবার জানিয়েছেন, এই মামলায় ৫ জন সাক্ষী ছিলেন। এদিন দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা জজ শুক্লা সেনগুপ্ত ইমামকে সবকটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন। বৃহস্পতিবার সাজার মেয়াদ ঘোষণা করবেন বিচারক।
অন্যদিকে উল্টোডাঙা থানা এলাকায় এক সাত বছরের শিশুকে যৌন হেনস্থা করার ঘটনায় অভিযুক্তের ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। ঘটনাটি ঘটেছিল চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর। ক্যানাল ইস্ট রোডের ঝুপডির বাসিন্দা এক ব্যক্তি তাঁর মেয়েকে নিয়ে ঘরের ভিতরে ঘুমোচ্ছিলেন। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। গরম থাকায় ঘরের বাইরে ফুটপাতের ওপরেই শুয়েছিল তাঁর বড় ছেলে। গভীর রাতে ছোট মেয়েটিও বাইরে বেরিয়ে এসে ফুটপাতে তার দাদার পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
সেই ফুটপাতেই শুয়েছিল মহঃ মুস্তাকিন ওরফে মস্তান। ছোট মেয়েটি যে বেরিয়ে এসে ফুটপাতে শুয়েছে, সেটা লক্ষ্য করেছিল সে। রাত ৩টে নাগাদ হঠাৎই শিশুটির মুখ চেপে ধরে তাকে খালের পাশে একটি গাছের তলায় নিয়ে যায় মস্তান। মেয়েটির মুখ চেপে ধরেই যৌন হেনস্থা করতে শুরু করেছিল মস্তান। কিন্তু কোনওভাবে চিৎকার করে কেঁদে ওঠে ছোট্ট মেয়েটি। সেই চিৎকার শুনতে পেয়ে ছুটে আসেন শেখ কুরবান ওরফে সূরজ। কাছেই ফুটপাতের ওপরে ঘুমোচ্ছিলেন তিনিও। সূরজকে আসতে দেখে মেয়েটিকে ফেলে পালিয়ে যায় মস্তান।
ওই ঘটনার অভিযোগ পেয়ে মস্তান নামে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দু মাসের মধ্যে এই মামলার রায় ঘোষণা করল আদালত। বিচারক ৫ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০০০০ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। জরিমানা না দিলে আরও ৬ মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।