সুশান্ত ঘোষ, বনগাঁ, ১২ জুন: দু’কোটি টাকার বেশি সোনা উদ্ধার হল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট থানার ভারত– বাংলাদেশ সীমান্ত-সংলগ্ন গাবর্ডা এলাকা থেকে। বিএসএফের গোয়েন্দা শাখার দেওয়া খবরের ভিত্তিতে ১৫৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের গাদারধা ক্যাম্পের জওয়ানেরা বৃহস্পতিবার অভিযান চালান। উদ্ধার হয় ৩০টি সোনার বিস্কুট, যার ওজন প্রায় ৪,৩৫৭ কেজি। বাজার দর দু’কোটি টাকার বেশি। ধৃত ওই ব্যক্তির নাম পরেশ রায়।
বিএসএফ সূত্রের খবর, জানুয়ারি মাস থেকে সোনার বিস্কুট পাচারের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া বিস্কুটের মূল্য প্রায় ১১ কোটি টাকা। বিএসএফ কর্তারা জানিয়েছেন, কাল বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ খবর আসে, বাংলাদেশ থেকে সোনার বিস্কুট ঢুকবে এ দেশে। সেই মতো জওয়ানেরা ওঁৎ পেতে ছিলেন। পৌনে ৬টা নাগাদ তাঁরা দেখতে পান, স্থানীয় গাবর্ডা গ্রামের মধ্যে দিয়ে এক যুবক বাইক চালিয়ে আসছে। জওয়ানরা পিছু নিতেই সে বাইক নিয়ে পাশের খেতের মধ্যে ঢুকে পড়ে। জওয়ানেরা তাড়া করলে বাইক ফেলে রেখে পাশের একটি খালে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বিএসএফ জওয়ানরা তাকে ধরে ফেলে। তার কাছ থেকে মালেশিয়ার কিছু মুদ্রা পাওয়া গেছে।
পুলিশের একাংশের অনুমান, এত দিন যে সব সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়েছে, তা ভিনদেশ থেকে পাচার করে আনা হত। কিন্তু এ দিন যে বিস্কুটগুলি মিলেছে, তা গরু পাচারের টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয়েছিল। গরু পাচারকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশের পাচারকারীদের মধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়। বড় অঙ্কের নগদ টাকা আনা-নেওয়ায় ধরপাকড়ের আশঙ্কা বেশি থাকে।
এই সীমান্ত ও সংলগ্ন এলাকা দিয়ে সোনার বিস্কুট পাচার হওয়াটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিএসএফ ও শুল্ক দফতরের হাতে বাংলাদেশ থেকে বিস্কুট আনার সময় বেশ কিছু পাচারকারী ধরা পড়েছে। সীমান্ত বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত কয়েক জনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। কখনও সাইকেলের টায়ারের মধ্যে করে, কখনও বা পায়ু ছিদ্রের মধ্যে করেও বিস্কুট পাচারের চেষ্টা হয়েছে। দুবাই থেকে ঢাকা হয়ে বিস্কুট এ দেশে ঢুকছে বলে জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বসিরহাট থেকে বিস্কুট কলকাতার বড়বাজার-সহ নানা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।