পাত্রীকে বিয়ের আসরে মারধর, রণক্ষেত্র বিয়েবাড়ি

আমাদের ভারত, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ২ ডিসেম্বর:
বিয়ে বাড়িতে বরযাত্রীদের তাণ্ডবে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বিয়ের আসর। বিয়ের আসরে ভাঙ্গচুরের পাশাপাশি খাবার প্যান্ডেলেও ভাঙ্গচুর চালায় বরযাত্রীরা। পাত্রীর বুকেও লাথি মারার অভিযোগ ওঠে খোদ পাত্রের বিরুদ্ধে। এরপর গ্রামবাসীরা রুখে দাঁড়ালে পালিয়ে যায় বরযাত্রীরা। কিন্তু পাত্র সহ মোট আটজনকে আটকে রাখে কন্যাপক্ষ। ক্ষতিপূরণ না দিলে তাদের ছাড়া হবে না বলে জানিয়ে দেন তারা। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার জয়রামখালি গ্রামে। এই ঘটনায় এলাকায় যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়ায়।

ক্যানিংয়ের জয়রামখালি গ্রামের বাসিন্দা উর্মিলার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল সোনারপুর থানার বন হুগলীর বাসিন্দা বীরু দাসের। মাস ছয়েক আগে এদের রেজিস্ট্রি বিবাহ হয়েছিল। ১লা ডিসেম্বর সামাজিক অনুষ্ঠান করে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ের আসরে গন্ডগোলের কারণে কার্যত তা পন্ড হয়। কন্যা পক্ষের অভিযোগ বিয়েতে প্রথমে কুড়ি হাজার টাকা পণ চায় পাত্র, পরে সুযোগ বুঝে আরো পাঁচ হাজার টাকা বেশি চায়। তা দিতে রাজিও হয় পাত্রী পক্ষ। কিন্তু তবুও বিভিন্ন অছিলায় পাত্রী পক্ষকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করছিল বরের বাড়ির লোকজন। রবিবার রাত দশটায় বিয়ের লগ্ন থাকলেও বরযাত্রীদের নিয়ে পাত্র রাত দেড়টার সময় আসেন বিয়ে করতে। এলাকার মানুষজন বেশিরভাগই তখন নিমন্ত্রণ খেয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। একেতো দেরি হয়েছে, তাই দ্রুত বিয়ের পিড়িতে পাত্র ও পাত্রীকে বসিয়ে বিয়ে শুরু করিয়ে দিতে চান মেয়ের বাড়ির লোকেরা। অভিযোগ, সেই সময় মদ্যপ অবস্থায় বরযাত্রীরা খাবার প্যান্ডেলে ক্যাটারিংয়ের কর্মীদের সাথে বচসা শুরু করে। এরপর আচমকা খাবার প্যান্ডেলের চেয়ার টেবিল ও ঝাড়বাতি ভাঙ্গতে শুরু করে। ক্যাটারিংয়ের ছেলেরা বাধা দিতে গেলে তাদের মারধর করে, ভাড়ারের ঘরে ঢুকে সমস্ত খাবার নষ্ট করে দেয়। পাত্রী পক্ষ ঠেকাতে এলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। পাত্র নিজে পাত্রীর বুকে লাথি মারে। ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পাত্রীকে ক্যানিং হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

সেই সময় বিয়ে করতে না চেয়ে আসর ছেড়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষেপে ওঠে। পাল্টা শুরু হয় বরযাত্রীদের মারধর। মার খেয়ে পালিয়ে যায় বেশিরভাগ বরযাত্রী। কিন্তু এলাকার মানুষজন বর সহ মোট আটজনকে আটকে রাখে। ক্ষতিপূরণ ও পণের জন্য নেওয়া টাকা ফেরত চাইছেন পাত্রী পক্ষ। ওই পাত্রের সাথে আর বিয়ে দিতে নারাজ তারা। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাকি ছয়জন বরযাত্রীকে ছেড়ে দিলেও বর বীরু দাস ও তার এক দিদিকে আটকে রাখা হয়েছে। আটকে রাখা হয়েছে তাদের চারটে গাড়িও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *