Birbhum, প্রেমিকাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আত্মঘাতী প্রেমিক, চাঞ্চল্য বীরভূমের মাড়গ্রামে

আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ২৭ জুন : প্রেমিকাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হল প্রেমিক। ঘটনায় ঘটেছে বীরভূমের মাড়গ্রাম ও তারাপীঠ থানা এলাকায়। পুলিশ প্রেমিকের বাবাকে আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত প্রেমিকার নাম সুমিতা বায়েন (১৮) এবং প্রেমিক বিক্রম মাল (২০)। সুমিতার বাড়ি মাড়গ্রাম থানার বাতিনা গ্রামের বায়েন পাড়ায়। পার্শ্ববর্তী তারাপীঠ থানার খামেড্ডা গ্রামের বাসিন্দা ছিল প্রেমিক বিক্রম। সুমিতা খামেড্ডা সংলগ্ন বুধিগ্রাম হাইস্কুলে পড়াশোনা করত। সেখান থেকেই বিক্রমের সঙ্গে তার পরিচয়। পড়া ছাড়ার পর দু’জনের মধ্যে ফোনালাপ চলত। দুই পরিবারও বিষয়টা সম্পর্কে কিছুটা অবগত ছিল। দু’জনের ভালোবাসায় ছেদ ফেলেছে বছর দুয়েক আগে একটি খুনের ঘটনা।

বছর দু’য়েক আগে খামেড্ডা গ্রামে একটি খুনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নাম জড়ায় বিক্রমের। সুমিতা বিষয়টি জানতে পেরে সম্পর্ক ছিন্ন করে। এরপরেই সুমিতার বাড়ি থেকে অন্যত্র মেয়ের বিয়ের ঠিক করে বসে। ঠিক ছিল চলতি বছরের ৬ জুলাই মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম থানার তেলসুন্দি গ্রামে সুমিতার বিয়ে হবে। কিন্তু নাছোড় বিক্রম প্রতিনিয়ত সুমিতাকে ফোনে বিরক্ত করত। এরপর সুমিতার পরিবার খামেড্ডা গ্রামে গিয়ে বিক্রমের বাবা তপন মাল এবং মা মালতি মালকে মেয়ের অমতের কথা জানিয়ে আসে। সেই সঙ্গে জানিয়ে আসে সুমিতার অন্যত্র তারা বিয়ে ঠিক করেছেন। তারপরও বিক্রম ফোনে হুমকি দিতে ও বিরক্ত করতে ছাড়েনি। চারদিন আগে বিষয়টি তারাপীঠ থানা পর্যন্ত গড়ায়। থানায় উভয় পক্ষকে ডেকে মীমাংসা করে দেয়। ঠিক হয় বিক্রম আর বিরক্ত করবে না সুমিতাকে। এরপরেই বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাতিনা গ্রামে সুমিতাদের বাড়িতে যায় বিক্রম। সেই সময় সুমিতা খেয়ে হাত ধুতে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিল। সেই সুযোগে বিক্রম সুমিতাকে ধরে ফেটে একের পর এক ধরলো অস্ত্র দিয়ে কোপায়। সুমিতা
কোনক্রমে রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটে বাড়িতে ঢুকে বিষয়টি জানায়। পরিবারের লোকজন তৎক্ষণাৎ তাকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়, সেখানেই চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।

এদিকে ঘটনার পরেই পালিয়ে যায় বিক্রম। শুক্রবার সকালে তারাপীঠ থানার সাহাপুর গ্রামের কাছে রাস্তার ধারে থাকা একটি কাঠ মিলের মধ্যে বিক্রমের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

সুমিতার কাকিমা অপর্ণা বায়েন বলেন, “বিক্রমের পরিবারের মদতে সুমিতাকে বিরক্ত করত বিক্রম। আমরা ওর পরিবারের সকলের শাস্তি চাই।”

ঘটনার পর দুই পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *