সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৮ ডিসেম্বর: ফের এরাজ্যে বিএলও’র মৃত্যু। এবার বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল এলাকায়। স্কুলের ক্লাস রুম থেকে এক বিএলও-র ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ বিধানসভার রাজাকাটা এলাকায়। স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারাধন মণ্ডল আত্মহত্যা করেছেন বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। সাদা কাগজে ডটপেনে লেখা নোটে শিক্ষক লিখে গিয়েছেন, কাজের অত্যাধিক চাপের কথা। এই বিষয়টি জানাজানি হতেই তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। খবর পেয়ে রানিবাঁধ থানার পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, বাঁকুড়ার রাজাকাটা মাঝেরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন হারাধন মন্ডল। তাঁর কাঁধে পড়েছিল বাঁকুড়ার রানিবাঁধ বিধানসভার ২০৬ নম্বর বুথের বিএলও-র দায়িত্ব। নিজের বুথের কিছু ভোটারের শুনানিতে ডাক পড়ে। সেই ভোটারদের নথিপত্র জোগাড়ের নাম করে এদিন বেলা দশটা নাগাদ নিজের বাড়ি থেকে বের হন ওই বিএলও। দীর্ঘক্ষণ তাঁর খোঁজ না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তাঁর খোঁজ করতে করতে স্কুলে হাজির হন। তারা দেখেন স্কুলের একটি ক্লাস রুমের সিলিং ফ্যানে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর দেহ ঝুলছে।
ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, “আমি আর চাপ নিতে পারছি না। বিদায়।” একই সঙ্গে ওই নোটে লেখা রয়েছে, “এই কাজের জন্য আমিই দায়ী। এর সঙ্গে অন্য কারও যোগ নেই।” শেষে লেখা আছে, “সব ঠিক করেও আমি ভুল করলাম। ক্ষমা করো আমাকে।”
পরিবারের সদস্যদের দাবি, হারাধন মণ্ডল এসআইআর-এর কাজের চাপ নিতে না পেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। মৃত বিএলও’র ছেলে সোহম মণ্ডল বলেন যে, তার বাবা এসআইআর-এর চাপ নিতে পারেনি। তাই সুইসাইড করেছেন।
স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য চিত্তরঞ্জন মাহাতো বলেন, এই মৃত্যুর জন্য দায়ী ভারতের নির্বাচন কমিশন। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার বলেছেন, এই সময় এসআইআর- এর কাজ না করতে, কারণ এই সময় জঙ্গলমহলের বেশিরভাগ মানুষ হুগলি, বর্ধমান সহ বিভিন্ন জেলায় চাষের কাজে যায়, কিন্তু সেকথা শোনা
হয়নি। বিএলও’র কাজের চাপ সহ্য করতে না পেরেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

