আমাদের ভারত, হাওড়া, ১৬ জুন: করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার মাঝেই করোনা মুক্ত এক রোগী ও তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে হাসপাতালেই আশীর্বাদ করল রাজ্যের মন্ত্রী থেকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। মঙ্গলবার দুপুরে হাওড়া জেলার অন্যতম কোভিড হাসপাতলে নবদম্পতির আশীর্বাদ অনুষ্ঠান দেখে খুশি সকলে।
জানাগেছে, হাওড়ার দাশনগর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার সুপ্রিয় ব্যানার্জি ২ জুন হুগলির মশাটের বাসিন্দা পিয়ালির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ৩ জুন নববধূকে নিয়ে বাড়িতে হাজির হওয়ার পর রাতে সুপ্রিয়র করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এদিকে বিয়ের পরের দিন এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে নববধূ থেকে পরিবারের সদস্যরা। রাতেই সুপ্রিয়কে ফুলেশ্বর সঞ্জীবন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় পাশাপাশি পরিবারের সকলকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অন্যদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুপ্রিয়র সদ্য বিবাহের ব্যাপারটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে। তারপরই কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিয়র রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর তাকে যেদিন হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে সেদিন হাসপাতালেই বিয়ের আসর বসানো হবে। সেইমতো মঙ্গলবার হাসপাতালে সমস্ত আয়োজন করা হয়েছিল। সকালেই স্বামীকে নিতে হাসপাতালে হাজির হয়েছিল পিয়ালি। হাসপাতালে আসার পর তাকে নববধূর সাজে সাজিয়ে তোলা হয় পরানো হয় রজনীগন্ধার মালা। অন্যদিকে সুপ্রিয়কেও বরের সাজে সাজিয়ে তোলা হয়। পরে হাসপাতালের করিডোরে দুজনকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে উলুধ্বনি শঙ্খধ্বনি হাততালির পাশাপাশি বরণডালা দিয়ে তাদের বরণ করে দেয় হাসপাতালে অধিকর্তা ডাক্তার ডালিয়া মিত্র। পাশাপাশি এদিন নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করার জন্য হাসপাতালে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ডাক্তার নির্মল মাজি। উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের অধিকর্তা ডাক্তার শুভাশিষ মিত্র। অবশ্য শুধু আশীর্বাদ ছিল না সঙ্গে ছিল উপহার। আর অনুষ্ঠানের শেষে স্বামীকে নিয়ে হাসি মুখে বাড়ির পথে রওনা দিল পিয়ালী।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, রোগীকে বাড়িতে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাদের মতে হাসপাতালে এই ধরনের অনুষ্ঠান অন্য রোগীদের মনে সাহস যোগাবে। অপরদিকে হাসপাতালে এই ধরনের অনুষ্ঠান সম্পর্কে পিয়ালির বক্তব্য, হাসপাতালে যে এইভাবে বিয়ের আসর বসানো যায় সেটা তার ধারণাতেই ছিল না।