আশিস মণ্ডল, আমাদের ভারত, ৯ সেপ্টেম্বর: সাংসদ দেব, নুসরত জাহান থেকে সায়নী ঘোষের মতো তৃণমূলের সতীর্থ অবিনেতা অভিনেত্রীদের চোর, দুর্নীতিগ্রস্থ বলে কটাক্ষ করলেন খড়্গপুরের বিজেপি বিধায়ক ও অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধায়কে অশিক্ষিত মুখ্যমন্ত্রী বলতেও ছাড়েননি তিনি।
দু’দিন ধরে বীরভূম লোকসভার দুবরাজপুর থেকে সিউড়ি, রামপুরহাট, নলহাটির বিভিন্ন জায়গায় সভা করছেন তারকা বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার রাতে সভা করেন রামপুরহাট শিবতলা পাড়ায়। সেখানে তাকে তরবারি উপহার দেন দলীয় কর্মীরা। সেই উপহার পেয়ে হিরণ বলেন, “আত্মরক্ষার্থে তরবারির প্রয়োজন রয়েছে”।
শনিবার সকালে তারাপীঠ মন্দিরে মা তারার পুজো দেন হিরণ চট্টোপাধ্যায়। পুজো দিয়ে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ”। ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হিরণ বলেন, “ দুঃখের বিষয় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের আগে সকলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি থাকে। যে মুহূর্তে তারা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে তৃণমূল তাদের একটা ভ্যাক্সিন দেয়। সেই ভ্যাক্সিনটার নাম চোর এবং দুর্নীতি ভ্যাক্সিন। যারাই তৃণমূলে যোগদান করবেন সে দীপক অধিকারী (দেব) থেকে নুসরত জাহান, সায়নী ঘোষ লালার টাকা নিচ্ছে, নয়তো গরু পাচারের টাকা নিচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের ভ্যাক্সিন নেওয়া মাত্র তারা সব চোর হয়ে যান। দুর্ভাগ্য পশ্চিমবঙ্গের নামীদামী ব্যক্তি, অভিনেতারা তৃণমূলে নাম লিখিয়ে চোর হয়ে যান। যারা অসৎ সঙ্গে যাবেন তাদের সর্বনাশ হবেই। তাদের মা তারাও বাঁচাতে পারবে না”।
তারাপীঠে পুজো দিয়ে হিরণ সোজা চলে যান নলহাটিতে। সেখানে দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে অশিক্ষিতা বলে বসেন। তিনি বলেন, “আমরা মা তারার কাছে আশীর্বাদ চাইব যে পশ্চিমবঙ্গের যে অনাচার, অত্যাচার মাননীয়া অশিক্ষিতা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের কৃপায় মা বোনেদের হত্যা, ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচতে বিজেপির সুশাসন প্রতিষ্ঠা করুন, এবং পশ্চিমবঙ্গকে সোনার বাংলা করুন”। প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করে হিরণ বলেন, “জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীকে হঠাতে কয়েকটি টুকরো টুকরো দল একত্রিত হয়েছে। তাদের একমাত্র কাজ ভারতবর্ষকে টুকরো টুকরো করা। ভয় পেয়ে ২৮টি দলের ৬৪ জন নেতা জোট বেঁধেছে। সে জোটে রয়েছে জেল খাটা লালু প্রসাদ যাদব, আপনাদের বীরভূমের বাঘ এখন তিহার জেলে রয়েছেন। এরাই আবার দুর্নীতিমুক্ত, দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ার ডাক দিচ্ছেন। এদের মুখে এসব মানায় না”।
নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের প্রসাদপুর গ্রামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাংসদ শতাব্দী রায়কেও কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “উনি ১৫ বছর ধরে এখানে সাংসদ রয়েছেন। কলকাতায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে থাকেন। এখানে যখন আসেন তখন কালো চশমা পরে আসেন। কারণ খালি চোখে তিনি গরিবদের দুর্দশা দেখতে চান না। একজন গরিব মানুষ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি চাইতে গেলে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়। তাই সুদিন ফেরাতে বীরভূম থেকে এবার বিজেপিকে জয়যুক্ত করুন”।