বিজেপির লক্ষ্য ২০২১? বুথ কমিটি দূরের কথা, এক বছরে জেলা কমিটিই তৈরি করতে পারেনি

নীল বনিক, আমাদের ভারত, কলকাতা, ১৭ আগস্ট: বিজেপির লক্ষ্য ২০২১–এ রাজ্যে ক্ষমতা দখল করা। কিন্তু এখনো বিভিন্ন এলাকায় বুথ কমিটিই তৈরি হয়নি। একথা স্বীকার করেছেন স্বয়ং রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে অবস্থা আরও করুন, বুথ কমিটিতো দূরের কথা জেলা কমিটিও নেই। এক বছরে জেলা কমিটিই তৈরি হয়নি। এক বছর পর অসম্পূর্ণ জেলা কমিটি ঘোষণা করেও তা স্থগিত করে দিলেন করে দেওয়া হল।

সম্প্রতি মালদায় দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, বিভিন্ন এলাকায় এখনো বুথ কমিটি তৈরি করতে পারেননি। এর কারণ হিসেবে তিনি শাসকদলের রক্তচক্ষুর কথা বলেছিলেন। তাঁর বক্তব্য শাসকদলের ভয়ে কেউ সামনে আসতে পারছে না। কিন্তু কলকাতা লাগোয়া জেলাতেই এক বছরেও জেলা কমিটি তৈরি করতে পারেনি বিজেপি। কলকাতা লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগণা জেলাতেই এই অবস্থা। শুধু কলকাতা লাগোয়াই নয় এই জেলার নামের সঙ্গেও জুড়ে রয়েছে কলকাতা– জেলার নাম কলকাতা উত্তর শহরতলী। এই জেলায় এক বছর আগে সভাপতি হিসেবে কিশোর করের নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এক বছরেও তিনি জেলা কমিটি ঘোষনা করতে পারেননি।
এই নিয়ে জেলায় যথেষ্ট ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে। কর্মীদের অভিযোগ, জেলা কমিটি না থাকায় তেমনভাবে কোনও কাজ হচ্ছে না। কারণ কর্মীরা হতাশ হয়ে যাচ্ছিলেন। তার ওপর কোনও কোনও এলাকায় দেখা যাচ্ছে মণ্ডল সভাপতির একাধিক দাবিদার। প্রত্যেকেই ভাবছেন তিনিই মণ্ডল সভাপতি হবেন। ফলে একসঙ্গে কোনও কার্যক্রম না করে তাঁরা আলাদা আলাদা ভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করছেন। এর ফলে বিভিন্ন গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, বলে দাবি বিজেপির একাংশের। কারণ প্রত্যেকে মন্ডল সভাপতি বা জেলা কমিটিতে জায়গা পাওয়ার জন্য নিজের কাজ দেখাতে চাইছেন, ফলে দলীয় শৃঙ্খলা একেবারেই তলানিতে এসে ঠেকেছে বলে কর্মীদের মত।

এই অবস্থায় এক বছর পর ১৪ আগস্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করেছিলেন জেলা সভাপতি কিশোর কর। কিন্তু, সেই কমিটিও অসম্পূর্ণ ছিল। তাতে তিনজন সহ সভাপতির নাম ফাঁকা রাখা হয়েছে, একজন সাধারণ সম্পাদকের নাম এখনও ঠিক করতে পারেনি। এছাড়া সম্পাদকের জায়গাতেও একটা ফাঁকা রয়েছে অর্থাৎ সম্পাদক হিসেবে তিনি এখনও কাউকে খুঁজে পাননি। এই নিয়ে কর্মী মহলেও অনেক সমালোচনা হয়েছে, কেন তিনি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারলেন না। কিন্তু সেই জল্পনার মধ্যেই দু’দিন পর ১৪ তারিখ কমিটি ঘোষণার ঠিক দু’দিন পরেই ১৬ তারিখ একটি সার্কুলার দিয়ে সেই কমিটিকে স্থগিত করে দিয়েছেন। এর জন্য অনেকেই দলের গোষ্ঠী কোন্দকে দায়ী করেছেন।

এব্যাপারে আমরা কথা বলার চেষ্টা করি কলকাতা উত্তর শহরতলী জেলা সভাপতি কিশোর করের সঙ্গে। কিন্তুু দুঘন্টায় চার বার তাঁকে আমাদের ভারতের তরফে ফোন করা হয়। দুপুর ১২ টা থেকে ২ টো পর্যন্ত তাঁকে ফোনে ধরার চেষ্টা করি। কিন্তুু তিনি আমার ফোন তোলেননি। তারপর হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করি। তারও উত্তর দেয়নি কিশোর কর। এরপর আমার জেলার প্রাক্তন সাধারন সম্পাদক চণ্ডীচরন রায় বলেন, বিষয়টি দলের সাংগঠনিক। আর পুরো বিষয়টি জেলা সভাপতি নিজে দেখছেন। তাই এব্যাপারে আমি সংবাদ মাধ্যমের সামনে কিছু বলতে পারবো না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *