গোপাল রায়, আমাদের ভারত, আরামবাগ, ১৩ সেপ্টেম্বর: এক বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রবিবার সকালে উত্তেজনা ছড়ায় গোঘাটে। রেলস্টেশনের কয়েক’শ মিটার দূরে গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃত বিজেপির কর্মীর নাম গণেশ রায়(৫৬)। ঘটনাটি ঘটেছে গোঘাট থানার খানাটি এলাকায়। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজনা তৈরি হয় গোটা এলাকায়। দোষীদের শাস্তির দাবিতে গোঘাটের বকুলতলায় আরামবাগ জয়রামবাটি রোড অবরোধ করে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ চলার পর পুলিশ এসে মৃদু লাঠিচার্জ করলে অবরোধ উঠে যায়।
বিজেপি কর্মীর বাড়ি ভাঙ্গচুর করার পরিকল্পনা করছে তৃণমূল, এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা পৌঁছালে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা সাংবাদিকদের মারধর করে। এক ইউটিউবার আহত অবস্থায় আরামবাগের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়। সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরামবাগের এসডিপিও নির্মল কান্তি দাস সাংবাদিকদের জানান, ভোর ছ’টা নাগাদ স্টেশন থেকে কয়েক’শ মিটার দূরে স্থানীয় বাসিন্দারা মৃতদেহটি দেখতে পায়। দিনমজুর গণেশ রায় গরু ব্যবসায়ীদের গরু আনা নেওয়ার কাজে শনিবার বেরিয়েছিল। প্রতিদিন সে নেশা করত বলে জানাগেছে। আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল থেকে মৃতদেহটিকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর এই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। বিজেপির পক্ষ থেকে সরাসরি তৃণমূলকে এই খুনের ঘটনায় জড়িত বলে দাবি তোলা হয়।
বিজেপির আরামবাগ জেলা সাংগঠনিক সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, মৃতদেহটিকে ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। তৃণমূল আমাদের সক্রিয় কর্মীকে খুন করেছে। এর আগেও আরামবাগে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার তৃণমূল মিছিল করে এলাকায়। এরপর রবিবার সকালে আমাদের সক্রিয় কর্মীর দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দিনমজুর পরিবার অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়ল। অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক প্রশাসন।
গণেশ রায়ের ভাই কার্তিক রায় দোষীদের শাস্তির দাবি তুলে বলেন, দাদা বিজিপি করত। সেই কারণেই তাকে খুন করা হয়েছে।
বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, বিজেপি নিজেরাই নিজেদের কর্মীদের খুন করে রাজনীতি করছে। ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিনের বামফ্রন্টের কর্মী ছিলেন। কিছুদিন আগে বিজেপির সাথে ঘনিষ্ঠতা হয়েছে। তৃণমূলের কর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তদন্ত হলে সত্য প্রকাশ পাবে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।