আমাদের ভারত, ৯ নভেম্বর: দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তিতে বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস তথা দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জনবিচ্ছিন্ন, নৃশংস, রক্তপিপাসু বলে আক্রমণ শানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষার তাগিদে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আবার শহিদ হলেন ভারতীয় জনতা পার্টির একজন সক্রিয় সৈনিক।” এই মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সুকান্তবাবু লিখেছেন, “তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর আজ মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সোশ্যাল মিডিয়া কনভেনার পৃথ্বীরাজ নস্করের নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছে মন্দির বাজারের দলীয় কার্যালয়ের ভিতর থেকে। তাঁর দাবি, কয়েকদিন আগে তাকে তার নিজের এলাকা থেকেই তুলে নিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতী বাহিনী। নৃশংস খুনের আগে পৃথ্বীরাজের উপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে বলেও দাবি করেছেন সুকান্তবাবু। তাঁর অভিযোগ, পুলিশের কাছে ওর পরিবার একাধিকবার সহায়তা চাইলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাটুকার পুলিশ-প্রশাসন সম্পূর্ণ নিষ্ক্রীয় ছিল।
সুকান্ত মজুমদার আরও লিখেছেন, সাম্প্রতিক অতীতেও শুধুমাত্র নির্বাচন পরবর্তী সন্ত্রাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অংশে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উপর অকথ্য নির্যাতন করেছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। তাদের বহু সক্রিয় কর্মীর প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাও আরও একবার প্রমাণ করে দিল রাজ্যের জনবিচ্ছিন্ন, নৃশংস এবং রক্তপিপাসু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক কতটা ভয় পেয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টিকে। দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, আমরা আমাদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও রাজ্যের প্রতিটি বিজেপি কর্মীর সুরক্ষার জন্য লড়বো। রাজ্যকে বাঁচানোর সংকল্পে রক্তপিপাসু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলছে, চলবে।”
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থানার অন্তর্গত দ্বীপের মোড় এলাকায় পৃথ্বীরাজ নস্কর নামে এক বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে দলীয় কার্যালয় থেকে। কয়েক বছর আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে সক্রিয় ভাবেই দলের কাজ করতেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পৃথ্বীরাজের কাছে সব সময় তিনটি ফোন থাকতো। রবিবার বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান ছিল। বোনেদের কাছ থেকে ফোঁটা নিয়েছিলেন তিনি। তারপর সোমবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি। তার তিনটি ফোনেই বাড়ি থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু ফোন বেজে যায়।
পরিবারের অভিযোগ, ফোনটি কখনো চালু থাকছিল, কখনো তা বন্ধ রাখা হচ্ছিল। পৃথ্বীরাজের পরিবারের তরফে বৃহস্পতিবার উস্তি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। শুক্রবার রাতে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে তার দেহ পড়ে আছে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তালা ভেঙ্গে উদ্ধার হয় দেহ। তা ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ মর্গে।